রূপনারায়ণপুরে। নিজস্ব চিত্র
আনাজ, মাছ, মাংস-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার দর চড়া, এই মর্মে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকদের নেতৃত্বে জেলা টাস্ক ফোর্স বৃহস্পতিবার রূপনারায়ণপুর ও চিত্তরঞ্জনের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালল। দলটির দাবি, ওজনে কারচুপি-সহ কিছু অনিয়ম নজরে আসায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
ক্রেতারা জানান, প্রায় এক মাস ধরে আলু ও নিত্য প্রয়োজনীয় আনাজের দর চড়েছে। অভিযোগ, আড়তদারদের একাংশ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে সামগ্রী মজুত করে রাখছেন। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘সম্প্রতি এমন বহু অভিযোগ মিলেছে। তার পরে জেলাশাসকের (পশ্চিম বর্ধমান) নির্দেশে টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। জেলার ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৫০ বাজারে অভিযান হবে।’’
এ দিন সকালে, দলটি প্রথমে রূপনারায়ণপুরের ডাবর মোড় লাগোয়া বাজারে হানা দিয়ে আলু-সহ অন্য আনাজের দাম নিয়ে খোঁজখবর করে। পাশাপাশি, দাড়িপাল্লা, বাটখারা পরীক্ষা করেন তাঁরা। কিছু ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়ায়, সেগুলি বাজেয়াপ্তও করা হয়।
দিলীপবাবু জানান, মাঝখানে টোম্যাটোর দাম আকাশ ছুঁয়েছিল। এখন কিছুটা নিম্নমুখী। তবে দাম আরও কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিক্রেতাদের। কয়েকজন বিক্রেতা জ্যোতি আলুর দাম ৩০ থেকে কমিয়ে ২৮ টাকা করেছেন। তাঁদেরও সরকার নির্দেশিত ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে চিত্তরঞ্জনের আমলাদহি বাজারেও অভিযান চালানো হয়।
দু’টি বাজারেই ক্রেতারা মূলত আলুর চড়া দাম নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে কৃষি বিপণন দফতরের ‘রেগুলেটেড মার্কেটিং কমিটি’র সচিব শুভ্রাংশু সিংহরায় বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের সব বাজারে বর্ধমান থেকে আলুর আমদানি হয়। কিন্তু বর্ধমানের বহু এলাকায় ঘন-ঘন লকডাউন চলছে। ফলে, হিমঘর থেকে নিয়মিত আলু বার করা যাচ্ছে না। শিল্পাঞ্চলের বাজারেও আলুর জোগান ঠিক মতো হচ্ছে না। চাহিদা ও জোগানের বিশাল ফারাকের জন্যই আলুর এমন দর।’’
কৃষি বিপণন দফতর জানায়, আসানসোলের দু’জায়গায় ‘সুফল বাংলা’র অস্থায়ী স্টল বসিয়ে ২৫ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রি করা হচ্ছে। চিত্তরঞ্জন ও রূপনারায়ণপুরের বাজারেও এমনটা করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা -ভাবনা চলছে।
পাশাপাশি, দফতরের আধিকারিকেরা জানান, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এই মুহূর্তে জেলার প্রতিটি বাজারে নিয়মিত অভিযান চালানো দরকার হলেও, কর্মীর অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এই ‘সুযোগে’ এক শ্রেণির বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
অভিযানের বিষয়টি নিয়ে রূপনারায়ণপুর বাজার সমিতির সম্পাদক মহম্মদ আরমান বলেন, ‘‘প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’’