এমনই ‘মডেল’। নিজস্ব চিত্র
‘দিদিকে বলো’র প্রচার, এনআরসি বিরোধিতার রেশ এ বার কাটোয়ার কার্তিক পুজোতেও। কাটোয়া শহরের মাধবীতলায় ‘জয় হিন্দ জয় বাংলা’ নামে একটি পুজো কমিটির পুজোয় ‘থিম’ হিসেবে এমন ছবিই দেখা গিয়েছে। সেই ছবিতেই আবার এক জনকে বারে বারে দেখা যাচ্ছে। ঘটনাচক্রে, সেই থিমের নানা মডেলের সঙ্গে শহরের পরিচিত তৃণমূল নেতা তথা ওই পুজোর ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ অমর রামের মিল খুঁজে পেয়েছেন দর্শকদের একাংশ।
তৃণমূলের শহর কার্যালয়ের দরজার সামনেই এই মণ্ডপ। কিন্তু থিম হিসেবে এমন বিষয় কেন? তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান অমরবাবুর বক্তব্য, ‘‘কার্তিক লড়াইয়ে সময়ে বহু মানুষ আসেন। সেই সুযোগে কর্মসূচিটি মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দিতে চাই। তাই এমন পরিকল্পনা।’’
শনিবার দুপুরে ওই মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, মোট দশটি খোপে সাংবাদিক সম্মেলন, পদযাত্রা, নানা বৈঠক, জনসাধারণের মধ্যে মোবাইল নম্বর দেওয়া, কার্ড বিতরণ, নৈশভোজ ও রাত্রিবাসের মতো কর্মসূচির নানা বিষয় পটচিত্র ও ‘মডেল’-এর মাধ্যমে সাজানো রয়েছে। আর এ সব মডেলের মধ্যেই উদ্যোক্তা এবং দর্শকদের একাংশ খুঁজে পাচ্ছেন অমরবাবুর আদল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জন বলেন, ‘‘মডেলগুলো যে দাদার (অমর রাম) আদলেই বানানো তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।’’ সেই ‘মডেল’ কোথাও ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি উপলক্ষে ‘নৈশভোজে’ রান্না করছে, কোথাও বা সপার্ষদ পতাকা উত্তোলন করছে। সে সব দেখে রসিক এক দর্শকের মন্তব্য, থিম কর্মসূচি আর ‘মডেলে দাদা!’
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘এমন থিম অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। তবে, নেতার ছবি বা মডেল ব্যবহার সম্পর্কে খোঁজ নেব।’’ কিন্তু ২০১৮-য় তৃণমূলের রাজ্য কোর কমিটির এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়া দলীয় প্রচার, কর্মসূচিতে অন্য কোনও নেতার ছবি ব্যবহার করা যাবে না। বিষয়টিকে সামনে রেখে শিলিগুড়িতে নিজের ছবি নিজেই সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেবও। এ প্রসঙ্গে অমরবাবুর তিক্রিয়া, ‘‘দিদি তো সর্বত্রই আছেন। দিদির সঙ্গে আমরা আছি, সঙ্গী হিসেবে।’’