কথা বলতে বলতে মাঝেসাঝেই কেটে যাচ্ছে ফোন, মিলছে না টাওয়ারও। কোথাও বা আবার মাঝেসাঝেই বসে যাচ্ছে ইন্টারনেট। এর জেরে গ্রাহকদের পাশপাশি সমস্যায় পড়ছে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি দফতরও। অভিযোগ, অবস্থা এতটায় শোচনীয় যে, মাঝেসাঝেই মিলছে না ন্যূনতম পরিষেবাও।
বিএসএনএল-এর আসানসোল জেলার অন্তর্গত দুর্গাপুর মহকুমায় রয়েছে বেশ কয়েকটি টেলিফোন কেন্দ্র। কাঁকসা, রণডিহা, বুদবুদ, বনকাটির মতো বেশ কয়েকটি গ্রামীণ এাকায় টেলিফোন কেন্দ্র থাকলেও বিএসএনএল-র পরিষেবা মাঝেসাঝেই মিলছে না বলে জানালেন গ্রাহকদের একাংশ। ল্যান্ডলাইন, মোবাইল— সর্বত্রই বিপত্তি ঘটছে টেলি-যোগাযোগের। আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক, কাঁকসা, বুদবুদের বিভিন্ন সরকারি দফতর, হাসপাতাল, থানাতে বিএসএনএল-এর ল্যান্ডলাইন বেশি ব্যবহার হয়। কিন্তু বেহাল পরিষেবার জেরে অনেক সময়েই কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে জানান বিভিন্ন দফতরের কর্তারা। শুধু টেলি যোগাযোগই নয়, মাঝেসাঝেই বিকল হয়ে পড়ছে সরকারি এই টেলি সংস্থার ইন্টারনেট পরিষেবা ও ফ্যাক্স।
প্রায়শই বিভিন্ন সরকারি দফতরে ফ্যাক্স বা ইন্টারনেট কাজের সময়ে বসে যাওয়ায় গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে জানান বিভিন্ন আধিকারিক ও কর্মীরা। ব্যাঙ্কের লেনদেনেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। চাকতেঁতুল গ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক ও এটিএম রয়েছে। অভিযোগ, মাঝেসাঝেই দিনের বেশির ভাগ সময় ধরে ‘লিঙ্ক ফেলিওর’ দেখায়। বিভিন্ন গ্রাহকদের দাবি, ব্যাঙ্কে গিয়ে সমস্যার সমাধানের আর্জি জানানো হলে ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয়, ইন্টারনেট নেই। একই সমস্যা বিএসএন-এর সংযোগ থাকা ফ্যাক্সগুলির ক্ষেত্রেও। সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পালের অভিযোগ, ‘‘বেশ কয়েকবার বিএসএন-এর সংযোগ কাজের সময়ে বেহাল হয়ে যাওয়ায় স্কুলের জরুরি কাগজপত্র বিভিন্ন সরকারি দফতরে পাঠাতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়।’’ কাঁকসার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর-সহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিসেই এই হাল। কাঁকসার সুমন রায়ের বক্তব্য, ‘‘বিএসএনএল-এর পরিষেবা প্রায় দিনই মেলে না। মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও, তা বন্ধ হতেও বেশি সময় লাগে না।’’
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বেসরকরি অন্য নেটওয়ার্কের সংযোগ নিতে ঝুঁকছেন বলে দেখা গেল। মানকরের আনন্দগোপাল গোস্বামী, কাঁকসার বাসিন্দা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়েরা জানান, দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইলের টাওয়ারে গণ্ডগোল। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি সংযোগের দিকেই তাঁরা ঝুঁকছেন বলে জানান।
এমন হাল কেন বিএসএনএল পরিষেবার? সংস্থা সূত্রে খবর, পানাগড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের নীচ দিয়ে কেবলগুলি গিয়েছে। জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ চলার কারণেই বারবার কেবল কেটে যাচ্ছে বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি সংস্থার আধিকারিকদের। যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, কাজ শুরু আগে সরকারি টেলি সংস্থাটিকে কেবলগুলি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করা হয়।