গাড়ি আটকে জনতার বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এর মধ্যে মদ-‘পাচার’। তা-ও ‘রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা’র বোর্ড দেওয়া একটি গাড়িতে করে। এমনই অভিযোগে গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, গাড়িটি কোনও ঠিকাদারের হতে পারে। বৃহস্পতিবার সকালে লাউদোহা (ফরিদপুর) থানার কাঁটাবেড়িয়া গ্রামের ঘটনা।
গ্রামবাসী জানান, কাঁটাবেড়িয়া গ্রামের এক বাসিন্দার ধবনি এলাকায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ী ‘লকডাউন-বিধি’ না মেনে নিজের বাড়ি থেকেই অবৈধ ভাবে মদ বিক্রি করছিলেন। এলাকাবাসীর দাবি, এ দিন মদ বিক্রি করা হয়েছিল। বিদ্যুৎ দফতরের বোর্ড লাগানো একটি পণ্যবাহী গাড়ি কাঁটাবেড়িয়ার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। গাড়িটির পিছনের অংশ ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ছিল। কিন্তু হাওয়ায় কোনও ভাবে ত্রিপল উড়ে যায়। এলাকাবাসীর দাবি, এর পরেই দেখা যায়, গাড়িতে দেশি মদের বোতলের কয়েকটি পেটি রয়েছে।
এর পরে বাসিন্দারা গাড়িটির পথ আটকান। চম্পট দেন গাড়ির চালক ও গাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি। এ দিন, গাড়িতে থাকা বারো পেটি মদ রাস্তায় ফেলে দেন বাসিন্দারা। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভও দেখানো হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ বাইন, মুকুল সেন প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘লকডাউনে বহু মানুষ সমস্যায় রয়েছেন। অথচ, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই ব্যক্তি অবৈধ ভাবে মদ বিক্রি করছেন।’’
বাসিন্দাদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি ও তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ও। শেষমেশ প্রায় সাত ঘণ্টা পরে, বিক্ষোভ ওঠে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘অবৈধ ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে ৫০ পেটিরও বেশি দেশি ও বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তবে, আবগারি দফতরের ডেপুটি এক্সাইজ় কালেক্টর (অণ্ডাল) সুমন দেবনাথ বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ী তাঁর দোকানে চুরির অভিযোগ জানিয়ে বাড়িতে মদ রাখার অনুমতি চেয়েছিলেন। তা দেওয়াও হয়েছিল। কিন্তু অবৈধ ভাবে কেউ মদ বিক্রি করলে অবশ্যই পদক্ষেপ করবে পুলিশ, প্রশাসন।’’
তবে, এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ওই গাড়িটিকে এর আগেও এলাকায় দেখা গিয়েছিল। তাঁদের সন্দেহ, মদের অবৈধ কারবারে এর আগেও এই গাড়িটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও বণ্টন সংস্থার বিভাগীয় আধিকারিক সুমন্ত রায় বলেন, ‘‘এটা কোনও ঠিকাদারের গাড়ি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’