সাঁকতোড়িয়ায় তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
রাত দেড়টা নাগাদ কয়লা ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটপাট ও গুলি ছুড়ে তাঁর ছেলেকে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার কুলটির ডিসেরগড়ের সাঁকতোড়িয়ার ঘটনা। সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয়েরা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন। সেমবার সকালে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুধীরকুমার নীলাকান্তম-সহ অন্য পুলিশকর্তারা ব্যবসায়ীর বাড়ি গিয়ে তদন্ত করেন। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ব্যবসায়ীর ছেলের চিকিৎসা চলছে।
গৃহকর্তা সুশীল আগরওয়াল পুলিশকে জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে তাঁদের তিনতলা বাড়িটির সংস্কারের কাজ চলছে। এ জন্য বাড়ির পিছনের দিকে বাঁশের অস্থায়ী সিঁড়ি বাঁধা হয়েছে। ওই সিঁড়ি বেয়েই তিন জন দুষ্কৃতী পিছন দিকের দোতলার একটি ঘরে ঢোকে। সুশীল বলেন, “সামনের দিকে গেটে পাহারায় ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী। তাই দুষ্কৃতীরা অস্থায়ী সিঁড়িটি ব্যবহার করে বলে মনে হয়। সামনের গেটে থাকা রক্ষীরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। ওই দুষ্কৃতীরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতেকথা বলছিল।”
সুশীল পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা প্রথমে তাঁর ঘরে ঢোকে। রিভলভার দেখিয়ে গয়না, টাকা হাতিয়ে নেয়। এর পরে তারা একতলায় নেমে আসে। সে সময় কোনও ভাবে সুশীলের ছেলে সৌরভ আওয়াজ পেয়ে জেগে ওঠেন। তিনি লুটপাটে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগ এর পরেই, দুষ্কৃতীরা সৌরভকে লক্ষ করে গুলি চালায়। সৌরভকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখে সুশীল-সহ পরিবারের বাকি সদস্যেরা হকচকিয়ে যান। তাঁরা সৌরভকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা ওই অস্থায়ী বাঁশের সিঁড়ি দিয়েই পালিয়ে যায়।
খবর পেয়েই রাতে পুলিশ অফিসারেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান খোদ পুলিশ কমিশনার। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ় সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযুক্তেরা দ্রুত ধরা পড়বে।”
এ দিকে, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, তার থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরে সাঁকতোড়িয়া বাজার। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকাটি। সেখানে এমন ঘটনা বাসিন্দাদের চিন্তা বাড়িয়েছে। তাঁরা জানান, আগে কখনও এমন ঘটনা এই এলাকায় হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, একসময় এলাকায় নিয়মিত টহল দিত পুলিশ। এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন করা থাকতে। এখন সে সব আর দেখা যায় না। তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার বলেন, “এই অবস্থা হতে থাকলে সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন না।” তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিমান আচার্যের কথায়, “এলাকায় এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। আমরা দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।” তবে পুলিশ নিষ্ক্রিয়তারঅভিযোগ মানেনি।