অবশেষে পুলিশ মর্গ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই মর্গের সংস্কার না-হওয়ায় মাঝেমধ্যেই যান্ত্রিক গোলযোগে কুলিং-চেম্বার বন্ধ হয়ে যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রও বিকল হয়ে পড়ে। ফলে, এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। দূষণ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে এলাকায়।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “মর্গ সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৭৫ লক্ষ টাকার অনুমোদনও মিলেছে।” সংস্কারের কারণে ওই মর্গটি বন্ধ রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের আশা, মর্গ বন্ধের অনুমতি পাওয়ার পরেই খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
মেডিক্যাল কলেজ ও বর্ধমান থানা সূত্রে জানা যায়, জেলার গুরুত্বপূর্ণ খুন কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু তো বটেই, ওই মর্গের উপর বীরভূম ও বাঁকুড়া পুলিশও নির্ভরশীল। এমনকী জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় নিহত বেশ কয়েকজনের ময়নাতদন্ত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হয়েছিল। সবমিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে দশ থেকে বারোটি মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। কিন্তু মর্গ বন্ধ থাকলে সমস্যা হবে না? অতিরিক্ত জেলা শাসক (স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন) প্রণব বিশ্বাস বলেন, “সাময়িক একটা সমস্যা হবে। সে জন্য আমরা কাটোয়া হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, এতে সমস্যা বাড়বে। তিনি জানান, দেড়-দু’মাস কার্যত গোটা জেলার ময়না-তদন্ত তখন কাটোয়াতে করাতে হবে। মৃতদেহ নিয়ে যাতায়াত করতে পরিজনদের সমস্যা বাড়বে, তেমনি পুলিশেরও অসুবিধা হবে। তদন্তকারী অফিসারদের যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্যই তখন কাটোয়া দৌড়াতে হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিকাঠামোর উন্নতির পাশাপাশি মৃতদেহ সংরক্ষণেরও বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই মর্গে ৮টি কুলিং চেম্বার রয়েছে। ফলে, অনেক সময়েই মৃতদেহকে গাদাগাদি করে রাখতে হয়। সংস্কারের পর কুলিং চেম্বার হবে ৭৫টি। তাতে সমস্যা থাকবে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।