প্রতীকী ছবি
জরুরি বিভাগের সামনে আট তলা ভবন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পূর্ত দফতর ( সোশ্যাল সেক্টর) হস্তান্তর করেছে কিছু দিন আগে। কিন্তু এখনও ওই ভবনে লিফ্ট বসাতে পারেনি পূর্ত দফতর (বিদ্যুৎ)। সেই ভবনের দোতলাতেই এখন ‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ (সারি) ওয়ার্ড করা হয়েছে। লিফ্ট না থাকায় রোগীদের সেখানে নিয়ে যেতে সমস্যার অভিযোগ উঠছে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত জানান, দু’সপ্তাহের মধ্যে অন্তত তিন তলা পর্যন্ত লিফ্ট চালুর কথা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয়েছে। যদিও তা হবে কি না, নির্দিষ্ট আশ্বাস বৃহস্পতিবার দিতে পারেননি পূর্ত দফতরের (বিদ্যুৎ) কর্তারা।
বুধবার হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসক ভিডিয়ো-বার্তায় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) অভিযোগ করেন, অনেক চেষ্টা করেও এক রোগীকে সিঁড়ি দিয়ে ‘সারি’ ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে পারেননি। ওয়ার্ডের সামনে লিফ্ট ছিল না। ওই রোগীর মৃত্যু হয়। করোনার উপসর্গ রয়েছে, এমন রোগীদের যে ভবনে রাখা হচ্ছে, সেখানে লিফ্ট চালু নেই কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধমানের গাংপুরে বেসরকারি ‘প্রি-কোভিড’ হাসপাতাল বন্ধ হওয়ার পরে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এখানে ৫০ শয্যার এই ওয়ার্ড খুলতে হয়েছে। অন্য ওয়ার্ড বন্ধ করে নতুন ওয়ার্ড খোলা সম্ভব নয়। সে কারণেই ফাঁকা জায়গায় ‘সারি’ ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এ ছাড়া, হাসপাতালের ‘নিউ বিল্ডিং’-এ ‘ভেন্টিলেশন’-যুক্ত দশ শয্যার ‘আইসোলেশন’ ওয়ার্ড রয়েছে। সেখানেও করোনা-উপসর্গ থাকা আশঙ্কাজনক রোগী ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের শেষ দিকে আট তলা ভবনটি তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচে চার বছর ধরে কাজ চলে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, অনেক আগেই ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু লিফ্ট বসেনি বলে হস্তান্তর করা যাচ্ছিল না। শেষে লিফ্ট বসানো পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই ভবনটি হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পূর্ত দফতরের ( সোশ্যাল সেক্টর) এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মানিক দাস। দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই ভবনে দু’টি লিফ্ট বসানো হবে। কিন্তু তার কাজ এখনও শুরুই হয়নি।
হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘লকডাউন চলছিল বলে কাজের সমস্যা হচ্ছে। লিফ্ট চালুর আগেই ‘সারি’ ওয়ার্ড চালু করে দিতে হয়েছে। আমাদের তো কিছু করার নেই।’’ পূর্ত দফতরের (বিদ্যুৎ) এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য মাইতি বলেন, ‘‘ ‘লকডাউন’-এ কর্মীরা বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। এখন ফিরছেন। কাজও শুরু হয়েছে। আশা করছি, দু’মাসের মধ্যে ওই ভবনের দু’টি লিফ্ট চালু করে দিতে পারব।’’
ফলে, তত দিন দুর্ভোগ চলবেই, মনে করছেন রোগীদের পরিজনেরা।