প্রতীকী ছবি।
অজয় নদ থেকে বেআইনি ভাবে বালি তুলে বিক্রি করার অভিযোগে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির ভাই-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ। ধৃত নরোত্তম মণ্ডল আউশগ্রামের পাথরকুচি, আবুল মোল্লা আউশগ্রামের বেলেমাঠ ও শেখ তাজমুল ইলামবাজারের নীলডাঙার বাসিন্দা। আবুল অমরপুর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি গোলাম মোল্লার ভাই। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। যদিও বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের প্রভাব খাটিয়েই বেআইনি কারবার চলত।
জেলা পুলিশের ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) বীরেন্দ্রকুমার পাঠক বলেন, ‘‘আউশগ্রাম এলাকায় অজয় থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’টি ট্রাক ও একটি বালি তোলার যন্ত্র আটক করা হয়েছে। আরও কারা যুক্ত,খোঁজা হবে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের পাথরকুচি ঘাট থেকে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি ভাবে বালি তোলা চলছে। মাঝ নদে যন্ত্র নিয়ে গিয়ে বালি তোলা হয়। ট্রাক্টরে করে তা পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট জায়গায়। সরকারের রাজস্বেও ক্ষতি হয়। শনিবার বিকালে খবর পেয়ে ওই এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই তিন জনকে ধরা হয়। পুলিশের দাবি, তাঁদের দেখেই ট্রাক ও বালি তোলার যন্ত্রের চালকেরা পালিয়ে যায়। জেরায় ধৃতেরা তাঁদের কাছে বেআইনি কারবারের কথা স্বীকার করেছে বলেও পুলিশের দাবি।
সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর মণ্ডল, বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাসদের অভিযোগ, শাসক দলের প্রভাব খাটিয়েই এই ব্যবসা চলত এতদিন। তাঁদের দাবি, ‘‘বালি, কয়লা, গরু পাচার করে তৃণমূল নেতারা ফুলেফেঁপে উঠেছেন। তাঁদের জেরা করলে এই কারবারে যুক্ত মাথাদের নাম বেরিয়ে আসবে।’’ যদিও তৃণমূলের আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তৃণমূল নেতার ভাই কী করল, তার জন্য সেই নেতা কোনও ভাবেই দায়ী নন।’’ কোনও তৃণমূল নেতা-কর্মী এই কাজে যুক্ত থাকলে বিরোধীরা প্রমাণ দিক। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লার দাবি, ‘‘আমার ভাই জীবিকার জন্য ওই ঘাটে কাজ করত। ও কোনও ভাবে বেআইনি বালি কারবারে যুক্ত নয়।’’
এ দিন ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। বিচারক নরোত্তমকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান। বাকিদের পাঁচ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।