এই খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
তাঁদের অমতে বিয়ে করেছেন মেয়ে, এই অভিযোগে ছেলের বাবা ও দাদাকে রাস্তায় খুঁটিতে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠল তরুণীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লি এক্সটেনশন ব্লকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় যায়। যদিও থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি ‘প্রহৃতেরা’।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় বৈদ্য গাড়ি চালান। তাঁর সঙ্গে খাঁদরা কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নীতা প্রসাদের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। নীতারও বাড়ি ওই এলাকাতেই। সোমবার তাঁরা পিয়ালা কালীমন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন, এই খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
অভিযোগ, এর পরেই নীতার পরিবারের সদস্যেরা লোকজন নিয়ে সঞ্জয়ের বাড়িতে হাজির হন। এই বিয়েতে তাঁদের মত নেই বলে দাবি করেন তাঁরা। তবে সঞ্জয়কে বাড়িতে না পেয়ে ফিরে যান। দু’পক্ষই বিষয়টি তখন মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছেলে ও মেয়ের পরিচয়পত্র দেখে জানা যায়, তাঁরা দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। তাই এ ব্যাপারে পুলিশের কিছু করার নেই।
সঞ্জয়ের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ নীতার পরিজনেরা চড়াও হন তাঁদের বাড়িতে। ঘর থেকে সঞ্জয়ের দাদা তাপসকে টেনে বাইরে বার করে মারধর শুরু করা হয়। সেই সময় ঘরেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ তাপসের। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে প্রথমে রাস্তার ধারে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। পরে বাঁধন খুলেও মারধর করা হয়।’’ সঞ্জয়ের বাবা, পেশায় মাছ ব্যবসায়ী সন্তোষবাবু জানান, তিনি পাড়ার দোকানে চা খেতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরতেই তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
সন্তোষবাবু দাবি করেন, সঞ্জয়ের সঙ্গে নীতার সম্পর্ক ছিল। সোমবার ওঁরা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। তাঁর দাবি, ‘‘তার পর থেকে আমরাও ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। অথচ, মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছি অভিযোগ তুলে আমাদের মারধর করল ওরা।’’ মারের চোটে মাথায়, হাতে ও পায়ে আঘাত লেগেছে বলে দাবি তাঁর। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছতেই অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়।
সঞ্জয় ও নীতার সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। নীতার পরিবারের কারও সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তাঁদের বাড়িতে তালা ঝুলছে। বাড়ির লোকজন কোথায় গিয়েছেন, আশপাশের বাসিন্দারা তা জানাতে পারেননি। পুলিশ জানায়, বুধবার রাত পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফরিদপুর ফাঁড়ির পুলিশ।