খনিকর্মীর দেহ উদ্ধারের পরে তদন্ত। লাউদোহায়। নিজস্ব চিত্র।
নিজের নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে উদ্ধার হল অবসরপ্রাপ্ত খনিকর্মীর রক্তাক্ত দেহ। পুলিশ জানায়, ঝাঁঝরা কোলিয়ারি আবাসনের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র ঘোষ (৬১) ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার কালীপুরে বাড়ি তৈরি করছিলেন। বুধবার রাতে সেখানেই তাঁর দেহ মেলে। পুলিশের অনুমান, তাঁর মাথার পিছনে গুলি করা হয়েছে। তবে কে বা কারা খুন করতে পারে, সে নিয়ে অন্ধকারে পুলিশ ও মৃতের পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসিএলের বাঁকোলা এরিয়ার এবি পিট কোলিয়ারির ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কর্মী ছিলেন পূর্ণচন্দ্র। ঝাঁঝরা কোলিয়ারি আবাসনে সপরিবার থাকতেন। কালীপুরে তাঁর পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। সেখান থেকে কিছুটা দূরে নতুন বাড়ি করছিলেন তিনি। অবসরের প্রায় সাত বছর আগে বাড়ির কাজ শুরু করেছিলেন। দোতলার কাজ চলছে। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি প্লাস্টারে জল দেওয়ার জন্য সেখানে যান।
পরিবারের দাবি, ফিরতে দেরি হওয়ায় ছেলে ধ্রুবজ্যোতি তাঁকে ফোন করেন। ফোন বন্ধ ছিল। এর পরে পরিবারের লোকজন রাত ৮টা নাগাদ গিয়ে দেখেন, ছাদে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন পূর্ণচন্দ্র। পাইপ দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে। লাউদোহা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়। ধ্রুবজ্যোতি বলেন, “মাথার পিছনের বাঁ দিকে ক্ষতচিহ্ন দেখে মনে হচ্ছে, বাবাকে গুলি করা হয়েছে। বাবার কোনও শত্রু ছিল বলে জানা নেই।”
পরিবার সূত্রে জানা যায়, পূর্ণচন্দ্রের গলায় সোনার হার থাকত। সঙ্গে ফোন ছিল। সে সব উধাও। তবে ছিনতাইয়ের জন্য তাঁকে খুন করা হয়েছে, এমনটা মনে করছেন না পরিবারের সদস্যেরা। ছোট ভাই নিশীথের দাবি, “প্রথমে মনে করেছিলাম, পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সামনের মাঠে বসে থাকা কয়েক জন জানান, তাঁরা পটকা ফাটার মতো আওয়াজ পেয়েছিলেন। তা জানার পরে মাথার পিছনে গুলির মতো ক্ষত দেখি।” মেজো ভাই প্রদীপের দাবি, “এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে।” দেহ ময়না-তদন্তে আসানসোল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পূর্ণচন্দ্র খুন হয়েছেন ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। মৃতের মোবাইলের হদিস পেলে তদন্তে অগ্রগতি হত বলে দাবি পুলিশ সূত্রের। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা নির্মীয়মাণ বাড়ির আশপাশে মোবাইল-সহউধাও হওয়া সামগ্রীর খোঁজ করেন। তদন্তের জন্য দুপুরে পুলিশ কুকুরও আনা হয়। তবে বিশেষ সূত্র মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করা যায়, দ্রুত কিনারা হবে।”