থানার সামনে বিক্ষোভ।
বিজেপির পতাকা টাঙানোর সময় হামলা ও পরে দোকান-বাড়িতে ভাঙচুর চালানো, অগ্নিসংযোগের আভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান শহরের বাবুরবাগের নার্স কোয়ার্টারের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে থানা ঘেরাও, বিসি রোড অবরোধ করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। বিকেলের দিকে ওই এলাকায় ফের গোলমালের খবর পায় পুলিশ। ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) সৌভিক পাত্র, বর্ধমানের আইসি তুষার করের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে বিজেপির এক কর্মী ওই এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর বসির আহমেদ (বাদশা)-সহ পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেন।
বাবুরবাগের শান্তি কলোনির বাসিন্দা বিবেকানন্দ পাল থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, বিজেপির কর্মীদের নিয়ে লাড্ডু বিলি ও পতাকা টাঙানোর সময় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপর হামলা চালায়। আবাসনের ভিতর ঢুকে মহিলাদের মারধর এমনকি, শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। সেখান থেকে বেরিয়ে দুষ্কৃতীরা রাজু রাউত নামে দলের এক সমর্থকের গুমটি ভাঙে এবং মীরা রায় ও আরতি রায় নামে স্থানীয় দুই মহিলার বাড়িতে ঢুকে লুটপাট তালায় বলেও অভিযোগ। তিনি লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, বিজেপিকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের উপর এ ভাবে হামলা হবে বলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা শাঁসানি দিয়ে গিয়েছে।
ভোটের দিনও বাবুরবাগ সিএমএস স্কুলের পিছনে বিজেপিকে ভোট দেওয়া ‘অপরাধে’ একটি বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তিকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
এ দিন বর্ধমান থানার সামনে দাঁড়িয়ে মীরা রায়ের দাবি, “১৫০ জন তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে। আমার অসুস্থ ছেলেকেও মারধর করা হয়েছে।’’ আরতি রায় নামে আর এক মহিলার দাবি, “আমরা কোনও রাজনৈতিক দল করি না। অথচ বিজেপি করি বলে তৃণমূল হামলা চালাল!” বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শ্যামল রায়ের দাবি, “বাবুরবাগ-সহ বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূল ক্রমাগত সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পতাকা টাঙানোর জন্যে হামলা চালিয়েছে। ভোটে যোগ্য জবাব দেওয়ার পরেও তৃণমূলের শিক্ষা হয়নি।’’
যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর শেখ বসির আহমেদ বলেন, “আমি ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানি না। বিজেপির কর্মসূচিতে কেউ বাধা দিয়েছে কি না পুলিশ তদন্ত করুক। এখন শুনছি আমাদের কয়েকজনের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে বিজেপি।’’ বর্ধমান থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।