কালনা থানার সামনে বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
তাদের মাইক বাজিয়ে সভা করার অনুমতি না দেওয়া হলেও শাসকদলের সভায় মাইক বেজেছে— এই অভিযোগে কালনায় থানায় বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাইক বাজানোর অনুমতি ছিল।
কালনার রিক্রিয়েশন ক্লাবের মাঠে এ দিন তৃণমূল সিএএ এবং এনআরসি-র বিরোধিতায় একটি সভা করে। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু, কালনা২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়,জেলা তৃনমূলের সাধারন সম্পাদক মদন পোদ্দার, কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ ও বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু।
সন্ধ্যায় সেই সভা যখন শেষের পথে, তখন থানায় হাজির হন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থক। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের তরফে একটি নির্দেশিকা দেখিয়ে বুধবার বিজেপির একটি সভা বাতিল করা হয়। এ দিন মিছিল হলেও সেখানে হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করা হয়। অথচ, পর দিনই রাস্তায় মাইক বেঁধে কী ভাবে শাসকদল সভা করার অনুমতি পেল, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সন্ধ্যায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে থানায় আলোচনায় বসে পুলিশ। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারের দাবি, শাসকদলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে ফের পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। যদিও নিয়ম ভেঙে সভা করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। সভার পর দেবুবাবুর বক্তব্য, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাইক বাজানোর অনুমতি রয়েছে। তাই আমরা মাইক বাজিয়ে সভা করেছি।’’ পুলিশ জানায়, আইন ভাঙা হয়েছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার কলকাতায় দলের কালনার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব। সেই বৈঠক শেষ হওয়ার পরে কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু দাবি করেছিলেন, বৃহস্পতিবার শহরে দলের বৈঠকে তিনি থাকবেন কি না, তা জেলা সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদবাবু ও তাঁর গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই বিধায়কের এই টালবাহানা বলে মনে করছিল দলের একাংশ। এ দিন অবশ্য বৈঠকে আসেন বিধায়ক। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মিছিল করে সভাস্থলে পৌঁছন। সভায় শহরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন দেবপ্রসাদবাবু।
তবে সভায় গোষ্ঠীকলহ নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেন স্বপনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে আর কেউ বিচ্ছিন্ন ভাবে সভা করতে পারবেন না। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে শহর সভাপতি এবং পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সভার দিন ঠিক করা হবে। যাঁরা দলের অনুশাসন মানবেন না তাঁরা অন্য দল করতে পারেন।’’ দেবুবাবু বলেন, ‘‘পাঁচ বছর কারা কেমন কাজ করেছেন, দল তার খোঁজ রেখেছে। যাঁর যোগ্যতা রয়েছে, তিনি পুরভোটে টিকিট পাবেন।’’