ব্যস্ত সময়ে রাস্তা রুদ্ধ মিছিলে

এনআরসি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে গত শুক্রবার শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৫
Share:

মিছিল চলাকালীন অশান্তি এড়াতে মোতায়েন বাহিনী। নিজস্ব চিত্র

তিন দিন আগে এক মিছিল-বিক্ষোভের জেরে থমকে গিয়েছিল শহর। সোমবার ফের মিছিলের জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল আসানসোলের রাস্তা। ব্যস্ত সময়ে তৃণমূলের মিছিলের জেরে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীদের অনেকে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, যা আশা করা হয়েছিল তার চেয়ে বেশি ভিড় হওয়ায় কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে প্রশাসন ও দলের স্বেচ্ছাসেবকেরা তা সামাল দিয়েছেন বলে তাঁদের দাবি।

Advertisement

এনআরসি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে গত শুক্রবার শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। তার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবু বিজেপি কর্মসূচি প্রত্যাহার না করায় জিটি রোডে ব্যারিকেড বেঁধে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। এর জেরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাস্তায় বেরিয়ে শহরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলও সরব হয়।

রবিবার তৃণমূলের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, মিছিলের জেরে যাতে যাত্রীদের সমস্যা না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। কিন্তু এ দিন রাস্তায় নেমে অন্য রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে দাবি করেন অনেক যাত্রী। সকাল ১১টা থেকে আশ্রম মোড় এলাকায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় জমতে শুরু করে। দুপুর ১টায় মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকে জিটি রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বরাকরের দিকে যাওয়া যানবাহনগুলিকে ডিআরএম বাংলোর সামনের রাস্তা দিয়ে স্টেশন রোড ধরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। দুর্গাপুরের দিকের গাড়িগুলিকে জিটি রোডের একটি লেন দিয়ে কোনও ভাবে পার করানোর ব্যবস্থা হয়। তবে বেশিক্ষণ তা করা যায়নি। দুপুর ১২টা থেকে জিটি রোড একেবারে রুদ্ধ হয়ে পড়ে।

Advertisement

মিছিল শুরুর পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশন রোড। বিপাকে পড়েন অনেক ট্রেনযাত্রী। সাধারণত আসানসোল বাজারে বাস থেকে নেমে স্টেশন রোড ধরে বাসিন্দারা আসানসোল স্টেশনে পৌঁছন। কিন্তু এ দিন তাঁদের প্রায় দু’কিলোমিটার বেশি রাস্তা ঘুরে স্টেশনে যেতে হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের এই আইনের বিরুদ্ধে সরব সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। তাই আমাদের অনুমানের চেয়ে বেশি ভিড় হয়েছে। সামান্য অসুবিধা হয়েছে। তবে প্রশাসন ও আমাদের দলের স্বেচ্ছাসেবকেরা যতটা সম্ভব মানুষকে সাহায্য করেছেন।’’

এ দিন মিছিল শেষে সিটি বাসস্ট্যান্ডে একটি সভা করে তৃণমূল। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক দাবি করেন, ‘‘বিল পাশ হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এই রাজ্যে তা কার্যকর হবেনা। তাই চিন্তার কিছু নেই।’’ জোটবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন তিনি। জিতেন্দ্রবাবু দাবি করেন, ‘‘এই মিছিলই বুঝিয়ে দিচ্ছে, মানুষ ভ্রান্ত বিলের বিরুদ্ধে। কয়েক দিন আগে বিজেপি আসানসোলকে উত্তপ্ত করতে চেয়েও পারেনি। মানুষ ওদের পাশ থেকে সরে গিয়েছেন।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সে দিন আমাদের মিছিলের জন্য নয়, পুলিশ রাস্তায় ব্যারিকেড করায় সমস্যায় পড়েছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু এ দিন রাস্তা জুড়ে কর্মসূচি করে কাজের দিনে শহরের মানুষকে বিপাকে ফেলল তৃণমূল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement