কাটোয়ায় বিজেপি নেতাদের বৈঠক চলছে। নিজস্ব চিত্র
এক সময়কার তৃণমূল শহর সভাপতির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় পুরভোটে তৃণমূলকে জব্দ করার রণকৌশল তৈরি করা হচ্ছে বলে বুধবার দাবি করলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হওয়ার পরে গোপাল চট্টোপাধ্যায় বুধবার প্রথম কাটোয়া শহরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তাঁর পাশে বিজেপি নেতা অনিল দত্ত, সঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে ছিলেন এক সময়ের কাটোয়া শহর তৃণমূল সভাপতি ও প্রাক্তন পুরপ্রধান অমর রামও। বিধানসভা ভোটের আগে, তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।
কাটোয়া শহরের কাছারি রোডে নগর কার্যালয়ে বৈঠকের পরে, বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের নিরিখে কাটোয়া শহরে আমরা বেশ কিছু ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছি। পুলিশ-প্রশাসন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে পারলে আমরাই জিতব। তবে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ রুখতে আমরা প্রস্তুত। পুরসভা নিয়ে অমর রামের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হবে। ২০১৫ সালে ভোটে যে ‘সন্ত্রাস’ তৃণমূল করেছিল, এ বার তা করতে পারবে না।”
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, ওই ভোটে তৃণমূলের প্রধান মুখ ছিলেন অমর রাম। সে প্রসঙ্গে গোপালের দাবি, ‘‘তৃণমূলের অমর রাম আর বিজেপির অমর রামের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ ও ‘দুর্নীতি’ মেনে নিতে না পেরেই তিনি আমাদের দলে এসেছেন। বিজেপির আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরেই অমর ভোটে কাজ করবেন।”
যদিও অমরের দাবি, “গত পুরভোটে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ই সক্রিয় ছিলেন। তিনিই হিংসার রাজনীতি করে ক্ষমতায় রয়েছেন। তবে এ বার ভোটে আর সন্ত্রাস করতে পারবে না। বিজেপির কর্মীরা যে কোনও ভাবে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাবেন।’’
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “অমর রাম কী তা কাটোয়ার মানুষ ভাল করে জানেন। ২০১৫ সালের পুরভোটে আমাদের দলের কথা না শুনে ক্ষমতার লোভে তিনি শহরে লাগামছাড়া সন্ত্রাস করেছিলেন। ওদের গোলাগুলির মধ্যে পড়েই এক যুবক মারা যান।’’
এ দিন বিজেপির কর্মী বৈঠকে শহরের ২০টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে দেওয়াল লিখন, বাড়ি-বাড়ি প্রচার-সহ ভোট সংক্রান্ত নানা কাজ নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। নির্বাচনী কাজ করতে গিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও বাধা এলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়েও কর্মীদের মতামত নেওয়া হয়। একই বিষয়ে পরে, দাঁইহাট শহরেও কর্মী বৈঠক করেন বিজেপি নেতৃত্ব।