বিজেপি করার ‘অপরাধে’ মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে হচ্ছে, চলছে নির্যাতন—এমনই অভিযোগে সোমবার কাটোয়া মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিলেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে গত এক মাসে কেতুগ্রামে দুশো ও মঙ্গলকোটে প্রায় দেড়শো জন বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। তাঁদের ফিরিয়ে এনে অবিলম্বে চাষাবাদের ব্যবস্থা করে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন নেতারা।
মহকুমাশাসক সৌমেন পাল বলেন, ‘‘অঞ্চল ভিত্তিতে মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে ঠিক কত জন বাসিন্দা ঘরছাড়া আছেন, তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা দিতে বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বিজেপি নেতাদের দাবি, জুলাই থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবি-সহ একাধিক বিষয়ে মহকুমার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও ব্লক কার্যালয়গুলিতে গণবিজ্ঞপ্তি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। অভিযোগ, এই কর্মসূচির শুরু থেকেই বিভিন্ন এলাকার তৃণমূল নেতা কর্মীদের হাতে মার খাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। শুধু তাই নয়, পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে বিজেপি কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। বিজেপি নেতা অনিল দত্তের দাবি, ‘‘বহু কর্মী গ্রামে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন। গ্রামে ঢুকলেই তাঁদের পুলিশ মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। আতঙ্কের কারণে চাষাবাদে ক্ষতি হচ্ছে।’’
তাঁর আরও দাবি গত ১৮ জুলাই কেতুগ্রামের কান্দরা ব্লক কার্যালয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জমা দিতে গেলে তৃণমূল কর্মীদের সহযোগিতায় পুলিশ বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসায়। শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করা হয় ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। পরে দুটি মামলায় ৩৩ জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন এখনও অবধি গ্রেফতার হয়েছেন, বাকিরা আতঙ্কে গ্রামের বাইরে রয়েছেন বলেও তাঁর দাবি। এই ঘটনায় দুটি ট্রাক, ৪টে ভ্যান ও একটি মোটরবাইক ‘আটকে’ রেখেছে পুলিশ। মাঝরাতে তফসিলি মহিলাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও মারধর করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ অনিলবাবুর।
তিনি বলেন, ‘‘২৭ ও ২৮ জুলাই কেতুগ্রাম ১ ব্লকের পালিটা অঞ্চলের তিলডাঙায় পুলিশ আমাদের মহিলা কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। ২০ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। ২২ জুলাই মঙ্গলকোটের পালিগ্রাম অঞ্চলে বিজেপির ৬ জন মহিলা কর্মীকেও একই ভাবে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা রানা প্রতাপ গোস্বামীরও দাবি, ‘‘রাত হলেই এলাকায় দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে দাপাদাপি শুরু করে। প্রশাসন আমাদের ঘরছাড়া কর্মীদের ঘরে ফিরিয়ে দিক।’’
যদিও কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপি কর্মীরাই আমাদের কর্মীদের মারধর করছে। এলাকায় অশান্তি ছড়াতে বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই সমস্ত অভিযোগ করছে।’’