দু’দিন ধরে কর্মবিরতি, ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবি, চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগে তেতে ছিল হাসপাতাল। শুক্রবার চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও দুই মরণাপন্ন রোগীর অস্ত্রোপচার করে বাঁচিয়ে তুললেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকেরা। ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, ‘‘দু’জনেই ভাল আছেন। যে কোনও পরিস্থিতিতে মূমুর্ষ রোগীকে পরিষেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এটা চিকিৎসকদের কর্তব্য।’’
হাসপাতালের ইএনটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেওয়ানদিঘির জামারের কোডা গ্রামের বধূ পূজা রায় গলায় কয়েন আটকে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা দেখেন, ১৯ বছরের বধূর শ্বাসনালীতে কয়েনটি আটকে রয়েছে। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে একটু সুস্থ হন পূজাদেবী। শুক্রবার সকালে ওই বিভাগের চিকিৎসকেরা একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে জরুরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অস্ত্রোপচার করে বার করেন কয়েনটি। ডাক্তারদের দাবি, শ্বাসনালীতে কয়েন আটকে থাকলে জীবন সঙ্কট হতে পারত। তাই কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।
ওই অস্ত্রোপচার চলাকালীনই হাসপাতালে ভর্তি হন ক্যানসার আক্রান্ত, বর্ধমানের বাদশাহী রোডের আলোকলতা ভৌমিক। তাঁর গলার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা জানান, এর আগে অস্ত্রোপচার করে কৃত্রিম শ্বাসনালী লাগানো হয়েছিল ওই মহিলার। কোনও কারণে তা খুলে যাওয়ায় বিপদ হয়। এ দিন অস্ত্রোপচার করে ফের সেটি জায়গায় বসানো হয়েছে।
পূজাদেবীর আত্মীয় মিনতি সাঁতরা বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসা পাব না ধরেই নিয়েছিলাম। কিন্তু ডাক্তরেরা খুব সাহায্য করেছেন। তাঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’’ আলোকলতাদেবীর আত্মীয় রোহিনা দাস বলেন, “ডাক্তারদের ধর্না দেখে চিকিৎসা পাব আশা করিনি। কিন্তু ধর্নায় থাকা এক ডাক্তারই আমাদের সাহায্য করেছেন। সবাইকে ধন্যবাদ।’’
আন্দোলনকারী ছাত্র উত্তম মণ্ডল, সৌম্যজিৎ ভট্টাচার্যরা বলেন, “আন্দোলন করছি বলে আমরা অমানবিক নই। দিনের শেষে আমরা ডাক্তারই।’’