sidewalks

Sidewalk: ফুটপাত ‘থেকেও নেই’, ক্ষুব্ধ শহরবাসী

চার জেলার সীমানা শহর হওয়ায় কাটোয়া শহরে লোকজনের আনাগোনা বেশি। বাড়ছে শহরের জনসংখ্যাও। বেড়েছে যানবাহনও।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

কাটোয়া স্টেশনরোডে ফুটপাতেই বাজার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

‘চুরি’ গিয়েছে ফুটপাত। পুরভোটের মুখে এমনই অভিযোগে সরব হয়েছেন কাটোয়া শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, পুরসভা টাকা খরচ করে ফুটপাত তৈরি করলেও তা ‘বেদখল’ করেছেন কিছু ব্যবসায়ী। ফলে, ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের রাস্তায় গাড়ির গা ঘেঁষেই যাতায়াত করতে হচ্ছে। সে জন্য রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এবং পুর কর্তৃপক্ষ দখলদারির অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ফুটপাতে কখনও সখনও কেউ মালপত্র রাখলে, অভিযান চালিয়ে সে সব বাজেয়াপ্ত করা হয়।

Advertisement

চার জেলার সীমানা শহর হওয়ায় কাটোয়া শহরে লোকজনের আনাগোনা বেশি। বাড়ছে শহরের জনসংখ্যাও। বেড়েছে যানবাহনও। দোকান-বাজারও বেড়েছে। ফলে, সকাল হতে না হতেই শহরের জনবহুল রাস্তাগুলিতে ভিড় জমে যায়।

বাসিন্দাদের দাবি, শহরের অনেক জায়গাতেই দোকানিরা ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য সামনে ফুটপাতের উপরে মালপত্র ঢেলে রাখেন। তার উপরে ফুটপাথে বসা হকারেরাও রয়েছেন। ফলে, শহরের অনেক জায়গাতেই ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের নিশ্চিন্তে হাঁটার উপায় নেই। একটু অসতর্ক হলেই দোকানের মালপত্রে ধাক্কা লাগার ভয় থাকে। তাই ফুটপাত দখল মুক্ত করার দাবি উঠেছে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, বছর চারেক আগে পথচারীদের সুবিধার জন্য প্রায় কোটি টাকা খরচ করে ফুটপাত তৈরি করা হয়। কাটোয়া শহরের স্টেশনবাজার, কাছারি রোড, টেলিফোন ময়দান, সার্কাস ময়দান, সুবোধ স্মৃতি রোড-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ফুটপাত তৈরি করা হয়। বাসিন্দাদের দাবি, প্রথম দিতে ফুটপাতগুলি উন্মুক্ত থাকত। ফলে, পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু মাস ছয়েক যেতে না যেতেই ফের ধীরে ধীরে ফুটপাত ‘বেদখল’ করে পসরা সাজিয়ে বসতে শুরু করেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।

তবে ‘কাটোয়া মহকুমা ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক সুশীল সরকার ও ‘কাটোয়া মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতি’র আহ্বায়ক বিদ্যুৎ নন্দী বলেন, ‘‘আমাদের সদস্যদের প্রত্যেককে ফুটপাতের উপরে মালপত্র রাখতে বারণ করা হয়েছে। যদি কেউ রাখেন, তার দায় সংগঠনের নয়। প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে।’’

শহরের সার্কাস ময়দানের বাসিন্দা মিঠু সাহা বলেন, “সকাল হতে না হতেই শহরের রাস্তায় প্রচুর ভিড় হয়ে যায়। অনবরত যানবাহন চলাচল করে। আমাদের মতো বয়স্ক মানুষেরা রাস্তায় চলাচল করতে ভয় পান। তাই ফুটপাতের দাবি উঠেছিল। বছর চারেক আগে ফুটপাত করায় আমাদের চলাচলে খুবই সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে ফের ফুটপাত ‘বেদখল’ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই পিচ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। ভোট আসছে। প্রার্থীরা ভোট চাইতে এলেই ফুটপাত দখলমুক্ত করার দাবি জানাব।” একই কথা জানিয়েছেন সুবোধ স্মৃতি রোডের মৃন্ময় দত্ত, মাধবীতলার শ্রাবণী সাহারা। আবার বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান, ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও ভোটার। তাই তাঁদের চটিয়ে ভোট হারাতে কোনও রাজনৈতিক দলই ঝুঁকি নেবে না।

তবে কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ভোটের দখলদারি বজায় রাখতে গিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারেনি তৃণমূলের পুর-বোর্ড। এ দিকে ফুটপাত বেশি উঁচু হওয়ায় পথচারীদেরও সমস্যা হচ্ছে। ফুটপাত করার নামে সরকারি টাকা লুট করা হয়েছে।” কাটোয়ার বিজেপি নেতা সঞ্জয় ভট্টচার্যেরও অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত
করতে পারছে না।”

সব অভিযোগ উড়িয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি “পথচারীদের সুবিধার জন্যই আমরা ফুটপাত তৈরি করেছি। বহু মানুষ তা ব্যবহার করেন। এতে শহরের যানজট কমেছে। বিরোধীদের অপপ্রচার শহরের মানুষ বিশ্বাস
করেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement