কালনার বাজারে মাছ কিনতে জমায়েত। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
পরপর দু’দিন লকডাউন। বুধবার তাই যেন ঢল নামল বাজারে। বিভিন্ন এলাকাতেই কার্যত স্বাস্থ্য-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাছ-আনাজ কেনাকাটা করলেন বহু বাসিন্দা।
জেলা প্রশাসন কালনা শহরে পাইকারি আনাজ-মাছের বাজার দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে। এ দিন সকাল ৮টা বাজতেই ভিড় জমে যায় শহরের চকবাজারে। বেশি ভিড় দেখা যায় মাছ ও মাংসের বাজারে। গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েই অনেককে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। লাইন পড়ে আনাজ, ফলের দোকানেও। অনেকের মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না বলেও অভিযোগ। ভিড় দেখা যায় মিষ্টির দোকানগুলিতেও।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী মৃণ্ময় রায় বলেন, ‘‘দু’দিন বাজার বন্ধ। তাই ভিড় থাকলেও তার মধ্যে কেনাকাটা করতে হয়েছে।’’ বাজার ফেরত কল্পনা ঘোষ বলেন, ‘‘এ দিন অনেক জিনিসের দাম বেশি হেঁকেছেন ব্যবসায়ীরা। তবু দু’দিন যেহেতু কিছু কেনাকাটা করা যাবে না, তাই বাড়তি দাম দিয়েও কিনে নিতে হয়েছে।’’
কাটোয়া, দাঁইহাটেও দোকান-বাজারে একই রকম ভিড় দেখা যায়। সকাল থেকেই কাটোয়ার বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনবাজার, কাছারি রোড, লেনিন সরণি, নিচুবাজার, বড়বাজার-সহ নানা রাস্তায় নামেন বহু বাসিন্দা। আনাজ, মাছের বাজার থেকে মুদির দোকান, লোক কম ছিল না কোথাও। একই ছবি দাঁইহাটের বাজারপাড়া, গঙ্গা রাস্তা মোড়, সুভাষ রোড-সহ নানা জায়গায়। যা দেখে বাসিন্দাদেরই একাংশের প্রশ্ন, ‘‘এই ভিড়ের পরে দু’দিন লকডাউনের আর কি অর্থ রইল?’’ মেমারি শহরেও এ দিন একই দৃশ্য দেখা যায়।
এ দিন কালনার চকবাজারে ভিড় দেখে তিনিও চিন্তিত বলে জানান কালনা পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ। তিনি বলেন, ‘‘মাছ কিনতে বাজারে গিয়েছিলাম। ভিড় দেখে বেশি না এগিয়ে হাতের কাছে যা পেয়েছি কিনে নিয়েছি।’’ কালনার এক পুলিশ-কর্তা দাবি করেন, ‘‘প্রচারে খামতি রাখা হচ্ছে না। তবু এক শ্রেণির মানুষ এখনও সচেতন নন।’’ কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের বক্তব্য, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিড় মানেই বিপদের আশঙ্কা। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বড় এলাকায়।’’