আসানসোলে রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। নিজস্ব চিত্র।
বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের উপযুক্ত করে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য শ্রম দফতর। সে লক্ষ্যে, আসানসোলে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। মূলত আসানসোল, দুর্গাপুর এবং পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শিল্পাঞ্চলের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রটি তৈরি করা হলেও, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়ার বেকাররাও এখান থেকে প্রশিক্ষণ পাবেন। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রটির পরিকাঠামো ঘুরে দেখে এমনটাই জানালেন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। দ্রুত বিষয়টি কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।
শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর তিনকে আগে শ্রমিক-কল্যাণ দফতর ও বয়লার ডিরেক্টরেটের উদ্যোগে সেন-র্যালে স্টেডিয়াম লাগোয়া এলাকায় কারখানার বয়লার সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। এ পর্যন্ত বার তিনেক সেখানে প্রশিক্ষণ হয়েছে। কিন্তু বিশাল আকারের ভবনটি প্রায় সারা বছরই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে। তাই ভবনটি কাজে লাগাতে এই উদ্যোগ। এ প্রসঙ্গে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ থাকলে, তাঁরা বিভিন্ন শিল্প-সংস্থায় কাজ পেতে বাড়তি সুযোগ পাবেন। তাই এই উদ্যোগ। এ ছাড়া পুরুষ ও মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে এখানে হাতের কাজেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”
দফতর সূত্রে দাবি, রাজ্যের ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা বিভিন্ন সংস্থায় কাজ পাচ্ছেন। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে বিভিন্ন বণিক সংগঠন বা শিল্প সংস্থার কর্তৃপক্ষ। জেলাতেও এ বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে বলে দাবি মন্ত্রীর। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, সম্প্রতি ‘কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি’-র কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সংগঠনের অধীনে থাকা বিভিন্ন শিল্প-সংস্থা কর্মী নিয়োগের আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্থানীয় বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেদের সংস্থায় নিয়োগ করবে।
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে সব শ্রমিককে পে-স্লিপ দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য জুড়েই বেশ কয়েকটি বৈঠক করার কথা জানান বেচারাম। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে সফরে ছিলেন রাজ্যের শ্রমিক কল্যাণ কমিশনার সমিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, সেন-র্যালেতে অবস্থিত শ্রমিক কল্যাণ ভবনটিকে অত্যাধুনিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ওই শ্রমিক কল্যাণ ভবনটিতে দফতরের নিজস্ব কাজকর্ম করা হয়। সে সঙ্গে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে সামাজিক কর্মসূচি পালনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। তা থেকে দফতরের আয় হচ্ছে বলেও দাবি।
এ দিকে, দুর্গাপুরে ইএসআই হাসপাতালে তরল অক্সিজেন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন বেচারাম। সঙ্গে ছিলেন দুর্গাপুরের মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ (নিকাশি ও পরিবেশ) প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) দীপঙ্কর লাহা প্রমুখ। বেচারাম অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছাড়াও হাসপাতালে ‘হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’, আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, রান্নাঘর, পানীয় জল-প্রকল্প, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবন-সহ অন্য পরিষেবার উদ্বোধন করেন। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। পাশাপাশি, ইএসআই হাসপাতালে দ্রুত ‘টেলি মেডিসিন’ পরিষেবা চালুর আশ্বাস দেন তিনি।