ছাড়িগঙ্গায় এ ভাবেই চলছে চাষবাস। নিজস্ব চিত্র
এই প্রথম শীতের আগে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমিয়েছে কালনার ছাড়িগঙ্গায়। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। নজরে এসেছে, ছাড়িগঙ্গার পাড়ে কিছু এলাকায় কচুরিপানা সরিয়ে ধানের বীজতলা তৈরি করছেন চাষিরা। সে কাজে কীটনাশকের ব্যবহার হচ্ছে। এতে চিন্তিত প্রশাসন ও পক্ষীপ্রেমীরা। তাঁরা মনে করছেন, পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
ছাড়িগঙ্গার পাড়ে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বহু মানুষ ধানের বীজতলা তৈরির কাজ করছেন সেখানে। অনেকে আবার চাষের মূল জমি তৈরির কাজেও হাত লাগিয়েছেন। কোলাহলের জেরে পরিযায়ী পাখিরা দূরে সরে যাচ্ছে। পক্ষীপ্রেমী মানিক ঘোষ বলেন, ‘‘পাখি দেখতে দূর থেকে মানুষ আসছেন প্রত্যেক দিন। ভবিষ্যতে এই এলাকায় পাখিরালয় গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যে ভাবে প্রতিদিন ছাড়িগঙ্গায় কচুরিপানা সরিয়ে চাষের কাজ বাড়ছে, তাতে পাখিরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। এমন চলতে থাকলে চলে যেতে পারে তারা। বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত প্রশসানের।’’ মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবি মরসুমে কম-বেশি ১৮৫ জন চাষ করেন ছাড়িগঙ্গার পাড়ে। পক্ষীপ্রেমীদের দাবি, ‘‘এ বছর চাষের সীমানা বেঁধে দেওয়া উচিত প্রশাসনের।’’
সম্প্রতি বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জ অফিসার শিবপ্রসাদ সিংহ, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিধান বিশ্বাস-সহ কয়েক জন আধিকারিক পাখিদের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন। বন দফতরের দাবি, ১৪টিরও বেশি প্রজাতির কম-বেশি তিন হাজার পাখি রয়েছে ছাড়িগঙ্গায়। পরিদর্শনের সময় ছাড়িগঙ্গার পাড়ে চাষের বিষয়টি নজরে আসে। পাখিদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কয়েক জন চাষিকে ডেকে কীটনাশক ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন আধিকারিকেরা। কাটোয়ার রেঞ্জ অফিসার মনে করেন, এ ভাবে চাষের কাজ বাড়তে থাকলে পাখিরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করবে। পাখিদের স্বার্থে ভাবতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। কালনার উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল জানান, পাখিদের স্বার্থে ছাড়িগঙ্গার পাড়ে চাষের কাজ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।