Road Accident

ঘরের ছেলেকে হারিয়ে স্তব্ধ পুজোও

এ দিন মণ্ডপের কাজ বন্ধ রেখে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। রবিবার পুজোর আনু্ষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। সেটাও বন্ধ রাখার ভাবনা রয়েছে তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান, শক্তিগড় শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪০
Share:

উজ্জ্বলের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খুঁটি পুজোতেও তিনি ছিলেন। আবার পরিবহণ দফতরের ইনস্পেক্টরের দায়িত্বও সামলাতেন পটু হাতে। বুধবার গভীর রাতে হাওড়ার পাঁচলায় মোটর ভেহিক্যাল ইনস্পেক্টর (এমভিআই) উজ্জ্বলকুমার জানার মৃত্যুর খবর পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের বড়শুল-অন্নদাপল্লিতে পৌঁছতেই ছন্নছাড়া হয়ে যায় এলাকা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গ্রামের বাড়িতে প্রিয়জনদের ভিড় জমেছিল। তাঁদের দাবি, পুজোর খুঁটিটাই নড়ে গেল।

Advertisement

এ দিন মণ্ডপের কাজ বন্ধ রেখে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। রবিবার পুজোর আনু্ষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। সেটাও বন্ধ রাখার ভাবনা রয়েছে তাঁদের। পুজো কমিটির সভাপতি প্রবীর দাস বলেন, ‘‘এ বারের পুজোয় প্রধান উদ্যোক্তা ছিল উজ্জ্বল। গত সপ্তাহে গ্রামে এসে মণ্ডপের কাজে হাত লাগিয়েছিল। চার দিন থাকার পরে সোমবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে যায়। আর বুধবার রাতে মর্মান্তিক খবর আসে। আপাতত সব রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-সহ নানা রকম আয়োজন বন্ধ রাখা হবে।’’

বর্ধমানের রাজ কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে পরিবহণ দফতরে চাকরি পান উজ্জ্বল। মাস দু’য়েক আগে পশ্চিম বর্ধমান থেকে বদলি হয়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার পরিবহণ দফতরে কাজে যোগ দেন তিনি। স্ত্রী তনয়া কলকাতা পুরসভার কর্মী। ওই দম্পতির চার বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা ভবানীদেবী, ভাই উৎপলের পরিবার। রাতে মৃত্যুর খবর আসা মাত্র উৎপল ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিকেলে উজ্জ্বলের দেহ গ্রামে নিয়ে আসা হয়। তাঁর এক বন্ধু সৌমেন সরকার বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে আড্ডা মারতাম। বরাবর দুঃস্থ, মেধাবী পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াত উজ্জ্বল।’’ আর এক বন্ধু অশোক বিশ্বাসের দাবি, ‘‘মৃদুভাষী, শান্ত স্বভাবের ছিল উজ্জ্বল। গ্রামে এলেই প্রচুর আড্ডা হতো। কী যে হল, ভাবতেই পারছি না।’’

Advertisement

মন খারাপ প্রতিবেশীদেরও। উজ্জ্বলের পড়শি, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অনিলকুমার সরকার বলেন, ‘‘ভাল চাকরি করত। কিন্তু শিক্ষকদের প্রতি উজ্জ্বলের শ্রদ্ধা ছিল। খুব ভাল ছিল ছেলেটা।’’ অন্নদামঙ্গল পুজো কমিটির সম্পাদক বিপ্লবকুমার গায়েনও বলেন, ‘‘পাড়ার ছেলেরা সবাই মিলে পুজোর মণ্ডপ তৈরি করে। ছুটি পেলেই গ্রামে এসে উজ্জ্বল সেই হাত লাগাত। শুধু তাই নয়, পুজোর সময় প্রসাদ বিলি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে সব কাজেই জড়িয়ে থাকত। মণ্ডপে ওঁকে আমরা সবাই খুঁজব।’’

দেহ নিয়ে পৌঁছনোর পরে ভেঙে পড়েন উজ্জ্বলের সহকর্মীরাও। এক সহকর্মী সঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘একজন সহকর্মী নয়, সহমর্মীকে হারালাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement