ব্যাঙ্ক ধর্মঘট উপলক্ষে এমনই চিত্র ছিল জেলার নানা প্রান্তে। বন্ধ থাকল নানা সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার। বাঁ দিকে, একটি ব্যাঙ্কের ই-কর্নার। শুক্রবার আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র
ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে শুক্রবার জেলা জুড়েই সমস্যায় পড়লেন বাসিন্দারা। শুক্রবার থেকে টানা দু’দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট, রবিবার ছুটির দিন। অর্থাৎ, টানা তিন দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ। কিন্তু সমস্যা বাড়িয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমগুলি বন্ধ থাকায়।
আসানসোলের গোপালপুরের বাসিন্দা অঞ্জলি কর জানান, নিকটাত্মীয়ের বিয়ের জন্য টাকা তুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে জানতাম। কিন্তু এটিএম বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়লাম।’’ আসানসোল রেলপাড়ের বাসিন্দা তৃষিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুক্রবারের মধ্যে ছেলের স্কুলের বেতন না দিতে পারলে পরীক্ষায় বসার অ্যাডমিট কার্ড পাবে না। কিন্তু এটিএম বন্ধ। কী করব জানি না!’’
আসানসোলের বাসিন্দারা জানান, রবীন্দ্রভবন লাগোয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে এসে দেখা যায়, সেখানে ‘পিকেটিং’ করছেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। একই ছবি দেখা যায় শহরের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনেও। উপভোক্তারা জানান, এ দিন রবীন্দ্র ভবন লাগোয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁরা ঢুকতে গেলে ব্যাঙ্ককর্মীরা জানান, ধর্মঘট চলায় কাজ হবে না। সেখানে দাঁড়িয়েই বেসরকারি সংস্থার কর্মী জয়ন্ত দত্ত বলেন, ‘‘মাসের এক তারিখ এই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন হয়। ধর্মঘটের জেরে বেতন পরে পাব।’’
সমস্যায় পড়েছেন প্রবীণেরাও। ইস্কোর প্রাক্তন আধিকারিক স্বপন নাগ জানান, পরপর তিন দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় সোমবার এমআইএস-এর টাকা তুলতে সমস্যা হবে।
সমস্যা হয়েছে দুর্গাপুরেও। নানা ব্যাঙ্কের উপভোক্তারা জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেই বিয়ের মরসুম রয়েছে। এটিএম কার্ড দিয়ে নির্দিষ্ট টাকার বেশি তোলা যায় না। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বেনাচিতির বাসিন্দা শীতল মণ্ডল এ দিন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় টাকা তুলবেন বলে ঠিক করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্ক ধর্মঘট হবে বলে শুনেছি। কিন্তু টানা তিন দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকলে আমাদের বিপদ।’’ এ দিন ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের সমর্থনে বেনাচিতি এলাকায় মিছিল বার করে ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠনগুলি।
সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি, আজ, সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থ বাজেট। এই পরিস্থিতিতে ‘ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কাউন্সিল সদস্য সচিন ভালোটিয়া বলেন, ‘‘এমনিতেই শিল্প-পরিস্থিতি ভাল নয়। তার পরে লাগাতার ধর্মঘট এলাকার অর্থনীতির উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’’