সংঘর্ষে উত্তপ্ত ভাতার। ছুটে গেল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
খাস জমির দখলকে কেন্দ্র করে শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার। শুক্রবার ভাতারের মোহনপুর গ্রামে তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনায় গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন মোট আট জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্য দিকে, সংঘর্ষের পর গোটা গ্রাম সুনসান। ভাতার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয় অকুস্থলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামাতে হয় র্যাফ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বনপাশ মৌজায় কয়েক বিঘা খাস জমি নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। বিবদমান দু’পক্ষই তৃণমূলের সমর্থক বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে আহত তৃণমূল কর্মী চন্দন খাঁয়ের কথায়, ‘‘মোহনপুর গ্রামের সেন পরিবারের ১০-১৫ বিঘা জমি দীর্ঘ দিন ধরে জবরদখল করে রেখেছেন জনৈক নয়ন সামন্ত, হালিম শেখ এবং রাজকুমার। তাঁরা দলের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এই কাজ করেছেন। কিন্তু বনপাশ মৌজার অন্তর্গত ওই জমি আদতে জীবন সেনের। তাঁর স্ত্রী রানু সেনের নামে জমির দলিল রয়েছে। রানু ক্যানসার আক্রান্ত। গ্রামবাসীরা চাইছিলেন, যাতে জোর করে দখল করে রাখা ওই জমি অসুস্থ মহিলাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাই গ্রামবাসীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জমিটি পুনরুদ্ধার করতে গিয়েছিলাম।’’
ওই তৃণমূল নেতার দাবি, শুক্রবার সকালে হালিম এবং নয়নের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের ‘লেঠেল বাহিনী’ তাঁদের উপর চড়াও হয়। ব্যাপক মারধর করা হয়। তাঁদের হাতে অস্ত্রও ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। অন্য দিকে, মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ বাগদির দাবি, ‘‘আমরা ওই খাসজমি বেশ কিছু গরিব পরিবার চাষাবাদ করছিলাম। তৃণমূলেরই কিছু লোক জোর করে জমি দখল করতে এসেছিল। তা থেকেই সংঘর্ষ বাধে।’’
এই জমির দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে মোহনপুর গ্রামে যায় ভাতার থানার পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে পৌঁছন পূর্ব বর্ধমানের ডিএসপি(ডিএনটি) বীরেন্দ্রকুমার পাঠক, সিআই সাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, ভাতারের ওসি সৈকত মণ্ডল। বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে ভাতার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, ‘‘মোহনপুর এলাকায় কয়েক জন বেশ কিছু দিন ধরেই পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তারাই দুষ্কৃতী ভাড়া করে আমাদের কর্মী এবং নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশের কাছে দাবি করেছি, অপরাধীদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’