প্রতীকী চিত্র
শেষমেশ জেলায় তৈরি হল ‘জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড’ (জেজেবি)। প্রশাসনের দাবি, এ ছাড়া, শিশুশ্রম রোধ, শিশু শ্রমিকদের জন্য কল্যাণমূলক কাজ এবং তাদের আইনি সহায়তা দিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই তিনটি ক্ষেত্রেই মূল ভূমিকা নেয় ‘জেজেবি’।
প্রায় এক বছর আগে জেলায় তৈরি হয় ‘ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিট’ (ডিসিপিইউ) ও ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’ (সিডব্লিউসি)। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শিশু শ্রমিকদের আইনি সহায়তা দেওয়া থেকে তাদের কল্যাণমূলক কাজের অধিকার পাওয়ার বিষয়গুলি একটি কমিটির মাধ্যমে ‘জেজেবি’র কাছে তুলে ধরতে হয়। ‘পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিশু শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ’ নামে ওই কমিটিও তৈরি হয়েছে। কমিটির প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আসানসোলের অ্যাসিস্ট্যান্ট শ্রম কমিশনার প্রসাদরঞ্জন সরকার।
প্রশাসন সূত্রের দাবি, পরিকাঠামো তৈরি ও কর্মী নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম রায় জানান, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় কত জন শিশু শ্রমিক রয়েছে প্রথমে সে তথ্য সংগ্রহ, তাদের উদ্ধার করা এবং আইনি সহায়তা দিয়ে কল্যাণমূলক কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সাধারণত যে সংস্থা থেকে শিশু শ্রমিক উদ্ধার করা হয়, সেই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ওই শিশু শ্রমিকের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।
গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি তৈরি হয় ‘ডিসিপিইউ’ ও ‘সিডব্লিউসি’। শিশু সুরক্ষা বিষয়ে যাবতীয় প্রকল্প রূপায়ণ করে ‘ডিসিপিইউ’। বিভিন্ন রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও পরিত্যক্ত এলাকা থেকে অনাথ ও নিগৃহীত শিশুদের উদ্ধার করে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, সুরক্ষার ব্যবস্থা করে ‘সিডব্লিউসি’। জেলার কোথাও শিশু নিগ্রহ হলে বা অসুরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকলে, যে কেউ ১০৯৮ নম্বরে ফোন করে বিশদে জানালেই ‘চাইল্ড লাইন’-এর কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিশুকে উদ্ধার করেন বলে জানানো হয়েছে। গত কয়েক মাসে দুর্গাপুর ও কাঁকসা থেকে নিগৃহীত কয়েকজন শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু জেলা ভাগের পরে কয়ে বছর কেটে গেলেও শিশু সুরক্ষায় ‘জেজেবি’ কেন দেরিতে তৈরি হল, সে প্রশ্নও বারবার অতীতে তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন। এ জন্য পর্যাপ্ত কর্মী এবং পরিকাঠামোর অভাবকেই দায়ী করেছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তবে প্রসাদরঞ্জনবাবু বলেন বলেন, ‘‘পরিকাঠামো, কর্মী নিয়োগ প্রভৃতি বিষয়ে তোড়জোড় চলছে। দ্রুত পুরো মাত্রায় কাজ শুরু হবে।’’ সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর কুণ্ডু বলেন, ‘‘নিগৃহীত শিশুদের উদ্ধার করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে শিশুদের জন্য কল্যাণের কাজ পরিপূর্ণতা পাবে।’’