চলছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
বছরের প্রথম দিনে কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হবে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানা, জানাল পুলিশ। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই দু’দিকে যাতায়াত করা গাড়িগুলি পরীক্ষা শুরু করেছেন পুলিশকর্মীরা। এ দিন সকাল থেকে মাইথন জলাধারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিজেদের কব্জায় নিয়েছে সিআইএসএফ। আজ, বুধবার জলাধারের উপরে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ রাখা হবে।
প্রতি বছরই এই সময়ে সীমানা এলাকায় কড়া নজর রাখা হয়। এ বার সতর্কতা আরও বেশি? বাড়তি নজরদারির কারণ কী, সে ব্যাপারে পুলিশকর্তারা কিছু বলতে চাননি। তবে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, নানা রাজ্যে বর্তমানে ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে বছরের গোড়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখতেই এই কড়াকড়ি। এ রাজ্যের দিক থেকে বরাকর, ডুবুরডিহি, মাইথন ও রূপনারায়ণপুরের বিহার রোড চেকপোস্ট এলাকায় নজর রাখবে কমিশনারেটের পুলিশ। উল্টো দিকে, চিরকুণ্ডা, মাইথন ও চিত্তরঞ্জনের বিহার রোডে নজর রাখবে ঝাড়খণ্ড পুলিশ।
কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস জানান, এই দিনে বাইরে থেকে বহু দল পিকনিকে আসে। তাই রূপনারায়ণপুর, কল্যাণেশ্বরী, ডুবুরডিহি চেকপোস্ট লাগোয়া অঞ্চলে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। এক দিন আগে থেকেই অনেকে এলাকায় আসতে শুরু করেছেন। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে নজরদারি। বরাকর, ডুবুরডিহিতে অনেক গোপন ক্যামেরা বসানো হয়েছে। দূর পর্যন্ত নজরের জন্য উঁচু টাওয়ার তৈরি হয়েছে। অনমিত্রবাবু বলেন, ‘‘মাইথন-সহ সীমানা এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও মোতায়েন থাকবেন।’’ ডিভিসি-র জনসংযোগ আধিকারিক বিজয় কুমার জানান, বুধবার মাইথন জলাধারের উপরে কোনও যানবাহন চলবে না। চড়ুইভাতির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ব্যবহার করতে হবে।
জেলা প্রশাসনের তরফে এ বার ‘গ্রিন মাইথন, ক্লিন মাইথন’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পিকনিকের দলগুলিকে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। পলিথিন ও থার্মোকলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। মাদক সেবন এবং ডিজে সাউন্ডবক্সে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর এই সব নিয়ম ভাল ভাবেই পালন হয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তারা জানান। নতুন বছরেও সে সব বহাল থাকছে বলে জানান বিডিও (সালানপুর) তপনকুমার সরকার।
তবে প্রশাসনের এই কড়াকড়িতে এ বার মাইথনে পিকনিকের দলের সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। স্থানীয় ব্যবসায়ী ব্রজেন দেবনাথের কথায়, ‘‘ছুটির দিনে সকলে বেড়াতে এসে আনন্দ-উল্লাস করেন। নানা রকম নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক পর্যটক মাইথন থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।’’ ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, পিকনিকের মরসুমে মাইথনে বেড়াতে এসে বহিরাগতদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য মোটা টাকা দিতে হচ্ছে। ভিড় কমার পিছনে সেটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। বিডিও তপনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও এলাকাবাসীর স্বার্থেই এই কড়াকড়ি করা হয়েছে।’’