পালসিট টোলপ্লাজায় কাজে ব্যস্ত জওয়ানেরা। নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন ধরে টোলপ্লাজার গেটের পাশে চেয়ারে বসে রয়েছেন সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা। কলকাতামুখী ভারী ট্রাক এলেই থামিয়ে নম্বর লিখে, স্টিকার সেঁটে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমানের পালসিট দিয়ে যাতায়াতকারী ট্রাক-বাসগুলির কাছে অবশ্য এই দৃশ্য নতুন নয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরাই জানাচ্ছেন, গত বছরও সেনাদের টোলপ্লাজায় দাঁড়িয়ে গাড়ির খতিয়ান নিতে দেখেছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাত থেকে এই সমীক্ষা শুরু হয়েছে। চলেছে শুক্রবার রাত পর্যন্ত। ১২টা গেটের সাতটিতে তিন জন করে ২১ জন জওয়ান রয়েছেন। শুক্রবার দেখা যায়, কলকাতার দিকে যাওয়া ভারী ট্রাক দেখলেই হাত দেখিয়ে থামানো হচ্ছে। তারপরে পিএমএস (পানাগড় মিলিটারি স্টোর) স্টিকার সাঁটিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। গাড়ি বেরোনোর সময় নম্বর খাতায় লিখে রাখছেন সেনারা। সঙ্গে কত টন বহন ক্ষমতা তাও লিখে নেওয়া হচ্ছে। সেনাদের দাবি, আশপাশের দশ-বারো চাকার গাড়ির হিসেব রাখতে কলকাতামুখী ট্রাক ও কিছু সরকারি বাসের ক্ষেত্রে এটা করা হচ্ছে। গাড়ি চালক নিহাল সিংহ, বিশ্বেশ্বর চৌধুরীদের দাবি, ‘‘গত বছরও ডানকুনিতেও সেনারা গাড়িতে স্টিকার মেরেছিল। অসুবিধে হয়নি।’’
কর্মরত সেনাদের দাবি, বছরে দু’বার তারা ভারী গাড়ির খোঁজে অভিযান চালান। মূলত স্থানীয় দূরপাল্লার ট্রাকের নম্বর জোগাড় করা হয়। সেনাবাহিনীর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রয়োজনে যাতে ওই ট্রাকগুলি পাওয়া যায় তাই জেলা প্রশাসনের কাছে ট্রাকের নম্বর দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।’’ প্রশাসনকে জানিয়েই এই অভিযান চলছে বলেও সেনাদের দাবি। এ দিন জাতীয় সড়কে টহলরত জেলা পুলিশের এক আধিকারিককে সেনারা জানান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অনেক ট্রাকই হাত দেখানো দেখেও দাঁড়াচ্ছে না। কাজের অসুবিধে হচ্ছে। গতি নিয়ন্ত্রণের অনুরোধও জানানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রী সোমেশ বিশ্বাস, সুপ্রিয়া দেরা বলেন, ‘‘গত বছরও টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে গাড়ির খতিয়ান নিতে দেখেছি সেনাদের।’’ টোল প্লাজার ম্যানেজার প্রীতম চট্টোপাধ্যায়ও জানান, আগেও সমীক্ষা করে গিয়েছে সেনারা।
নোট বাতিলের পর থেকে বন্ধ টোল নেওয়া শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ফের চালু হবে। জানা গিয়েছে, প্লাজায় সাধারণ ভাবে ১০১ জন কর্মী থাকলেও শনিবার থেকে ২১০ জন থাকবেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের লোকও থাকছে তাঁদের মধ্যে। কার্ড সোয়াপিং মেশিন থাকবে ২৪টা। খুচরোও মজুত করা হবে। ১২টা গেটই খোলা থাকবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রথম দিকে হয়তো সমস্যা হবে। তবে আশা করছি সবাই খুচরো নিয়ে আসবেন।’’