প্রতীকী ছবি।
সপ্তাহ শেষের সন্ধ্যা। দুই বন্ধু মিলে রেস্তরাঁতে ঢুকেই ‘গার্লিক চিকেন’ অর্ডার করলেন। তবে, তার আগে দোকানের কর্মচারীকে প্রশ্ন, ‘দাদা, মাংসটা টাটকা তো?’
দৃশ্যটা বর্ধমান শহরের এক নামী রেস্তরাঁর। কলকাতায় ভাগাড়ের মাংস-কাণ্ড পাতে পড়ার ঘটনা সামনে আসার পরে বিক্রিবাটায় যেমন সামান্য প্রভাব পড়েছে, তেমনই ক্রেতাদের এমন ‘প্রশ্নে’র সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানালেন বর্ধমানের রেস্তরাঁ মালিকেরা। তবে সেই সঙ্গে তাঁরা আশ্বস্তও করছেন বর্ধমানবাসীকে। তাঁদের দাবি, এই শহরে মাংস সংরক্ষণের হিমঘর বা মাংস কাটার কারখানা নেই। আর তাই প্রায় প্রতি দিনই টাটকা মাংস কেনা হয় খোলা বাজার থেকে। তাই রেস্তরাঁ মালিকদের আশ্বাস, নিশ্চিন্তে বর্ধমানবাসী কামড় দিন মাংসের রকমারি পদে।
সাধারণত, বছরের অন্য সময়ে শহরের রেস্তরাঁগুলিতে শনি, রবিবার উপচে পড়ে মাংস-রসিকদের ভিড়। কিন্তু এই রবিবার ভিড় একই রকম থাকলেও মাংসের পদের চাহিদা বেশ কম বলেই জানালেন শহরের একটি রেস্তরাঁর সঙ্গে যুক্ত অসীম রায়। একই কথা বলেন টাউনহল এলাকার এক বিরিয়ানি ব্যবসায়ী জীবন দাসও। তিনি বলেন, ‘‘শনি ও রবিবারের ভিড় বেশ কিছুটা কম। যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁরাও আগে মাংস কেমন, তা নিয়ে খোঁজখবর করছেন।’’
তবে খোলা বাজারে বছরের অন্য রবিবারের মতো এ বারেও ভিড় ছিল উপচে পড়া। এ দিন সকাল থেকেই দেখা যায়, বর্ধমান স্টেশন বাজার, বীরহাটা, রাজবাটি-সহ শহরের নানা প্রান্তে দেদার বিকোচ্ছে মাংস। বীরহাটার মাংস ব্যবসায়ী বাবু খান বলেন, ‘‘রবিবার একেবারেই ঠিক ছিল। দুপুর দেড়টাতেও ভিড় ছিল ক্রেতাদের।’’
তা হলে রেস্তরাঁর মাংসের পদে অরুচি কেন? রবিবারের দুপুরে শহরের এক রেস্তরাঁয় খেতে আসা অমিত ঘোষ ও অপরূপা ঘোষেরা জানান, তাঁরা পনির বা মাছের পদেই ভরসা রাখছেন। অপরূপাদেবী বলেন, ‘‘বাজার থেকে কাটিয়ে আনা মাংসের কথা আলাদা। কিন্তু রেস্তরাঁয় আপাতত মাংস খাচ্ছি না।’’
তবে শহরের একটি রেস্তরাঁর মালিক মহেশচন্দ্র দাঁ-সহ নানা এলাকার ব্যবসায়ী, ক্রেতা সকলেই চাইছেন, যে ব্যবসায়ীদের জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়, তাঁদের যেন শাস্তি হয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের নজরদারিরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।