অনুব্রত মণ্ডল—ফাইল চিত্র
ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়কের গোষ্ঠীর মধ্যে ‘বিবাদ’ মাঝে-মধ্যেই প্রকাশ্যে আসার অভিযোগ ওঠে মঙ্গলকোটে। শনিবার সেখানে কর্মিসভা করে বিজেপিকে ঠেকাতে দলের অভ্যন্তরে ‘দ্বন্দ্ব’ মিটিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে বলে বার্তা দিলেন এলাকায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই সঙ্গে, ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কারও কাছে টাকা নেওয়া চলবে না, দিলেন এমন ‘হুঁশিয়ারি’ও।
এ দিন মঙ্গলকোট বিধানসভা এলাকার ১৮টি অঞ্চলের ২৮৬টি বুথের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন ডাকা হয় বটতলায়। অনুব্রত ছাড়া, উপস্থিত ছিলেন দলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী। সভায় বেশ কয়েকজন কর্মী দলের অন্দরের ‘কোন্দল’ নিয়ে অভিযোগ করেন। ব্লক সভাপতিকে তা মেটানোর নির্দেশ দেন অনুব্রত। প্রতিটি অঞ্চলে এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার কথা বলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপিকে কোনও মতে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়া হবে না। সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’
দলের বিরুদ্ধে যাতে দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে, সে বিষয়েও সতর্ক করেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দয়া করে কারও কাছে টাকা নেবেন না। খুব দরকার হলে আমার কাছে আসবেন। আমি সাধ্যমতো সাহায্য করব। টাকা আদায় করলে কেউ ভোট দেবেন না।’’ সভায় কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নানা কাজ নিয়ে ভর্ৎসনাও করেন তিনি। এ দিন বিজেপির বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন অনুব্রত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি নেতা-কর্মীদের ভোটের আগে ভাল ভাল খাবার দিতে হবে।’’
ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে নানা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সম্মেলনে।’’ মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। আমি এক সঙ্গেই কাজ করতে চাই। কিন্তু উল্টো দিক থেকেও হাত বাড়ানো উচিত।’’ সভা শেষে মঙ্গলকোট, চানক, ক্ষীরগ্রাম, মাজিগ্রাম এলাকার ২৩১ জন বিজেপি ছেড়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। যদিও বিজেপি তা মানতে চায়নি।
জেলা বিজেপির সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘নিজেদের লোককে বিজেপির সাজিয়ে দলে যোগদান করাচ্ছে তৃণমূল। মঙ্গলকোটের মানুষ ভোটের মাধ্যমে ওদের উচিত শিক্ষা দেবেন।’’