বাডিতে রাজলক্ষ্মী। নিজস্ব চিত্র
বিধবা ভাতার টাকা কেন মিলছে না, জানতে গিয়ে চোখ কপালে উঠল মঙ্গলকোটের যজ্ঞেশ্বরডিহি গ্রামের বাসিন্দা রাজলক্ষ্মী ঘোষের। ব্লক অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, তিনি নাকি ‘মৃত’। সে কারণে বিধবা ভাতার টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরকারি খাতায় জীবন ফিরে পেতে ছেলেকে নিয়ে পঞ্চায়েত থেকে মহকুমা প্রশাসনের দফতরে চক্কর কাটছেন রাজলক্ষ্মী।
আচমকা নিজের ‘মৃত্যুসংবাদ’ শুনে বেশ মুষড়ে পড়েছেন মহিলা। কৈচর ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উজ্জ্বল শেখের আশ্বাস, ‘‘রাজলক্ষ্মী ঘোষ বেঁচে আছেন বলে জেনেছি। কোথাও কোনও ভুলবশত তাঁর বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই তাঁর ভাতা ফের চালু করার ব্যবস্থা করছি।’’
রাজলক্ষ্মী অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের অগস্ট থেকে বিধবা ভাতার টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসছে না। সরকারি কোনও সমস্যায় হয়তো বিধবা ভাতার টাকা আসছে না বলে গোড়ায় মনে করেছিলেন তাঁর ছেলে সুধীন ঘোষ। কিন্তু নতুন বছরেও টাকা না আসায় কৈচর ২ পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে খোঁজ নেন সুধীন। জানানো হয়, বিধবা ভাতার বিষয়ে মঙ্গলকোট ব্লক অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে।
অভিযোগ, মাকে নিয়ে ছেলে সুধীন মঙ্গলকোট ব্লক অফিসে গিয়ে খোঁজ করে জানতে পারেন, রাজলক্ষী ঘোষকে কৈচর ২ পঞ্চায়েত থেকে মৃত বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই সরকারি নিয়মে তাঁর বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাজলক্ষ্মী এ কথা শোনার পরে ভেঙে পড়েন। এখন নিজেকে জীবিত প্রমাণের জন্য নথিপত্র জমা দিয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে মঙ্গলকোট ব্লক এবং কাটোয়ার মহকুমাশাসকের দফতরেও আবেদন জানিয়েছেন মহিলা। কৈচর ২ পঞ্চায়েতের তরফে জীবিত থাকার শংসাপত্র জমা দিয়ে দ্রুত ফের ভাতা চালুর ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
সুধীন বলেন, ‘‘মাকে জীবিত প্রমাণের সমস্ত নথি জমা দেওয়া হলেও, সরকারি খাতায় এখনও মৃত বলেই রয়েছে। এমন অবস্থা হতে পারে, আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি!’’ রাজলক্ষ্মী বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। ভাতার টাকায় অনেকটা সুরাহা হত। বছরখানেক ধরে ভাতা পাচ্ছি না। কবে প্রশাসনের কাছে ‘জীবিত’ প্রমাণ হয়ে ভাতা পাব, সে আশায় দিন গুণছি।’’
মঙ্গলকোটের বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’