দোকানে সাঁটানো রয়েছে পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট মানেই সকাল-সন্ধ্যা রাজনৈতিক আলোচনায় গমগম করে চায়ের দোকান। একে বাইরে ৪২ ডিগ্রি, তার সঙ্গে আলোচনা কখন বাগবিতন্ডায় গড়িয়ে যায় সেই আশঙ্কায় দোকানে পোস্টার সাঁটিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। তাঁদের আর্জি, দোকানে রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না।
বর্ধমান ২ ব্লকের পুরাতন বাস স্ট্যান্ডে প্রায় ৪৩ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছেন ওই দম্পতি। সত্তরোর্ধ্ব দুর্জয় মণ্ডল ও ষাটোর্ধ্ব ভারতী মণ্ডলের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের আগেও একই ধরনের পোস্টার সাঁটিয়েছিলেন তাঁরা। দম্পতি জানান, তাঁদের চায়ের দোকানে সকাল থেকেই বহু লোক আসেন। বিভিন্ন বয়সের মানুষের কথার ফাঁকে রাজনৈতিক আলোচনাও চলে। কথা বাড়তে বাড়তে মতভেদ দেখা দিলেই প্রমাদ গোনেন ওই দম্পতি। বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব মেটার পরে চায়ের আড্ডার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে রাজনীতি। বন্ধুরাও ভাগ হয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন শিবিরে। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছেন তাঁরা। দুর্জয় বলেন, ‘‘আমাদের একটাই ছেলে। সে প্রতিবন্ধী। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দু’জন মিলে সংসার যুদ্ধে ব্যস্ত থাকি। সংসার চলে দোকানকে ঘিরেই। রাজনৈতিক আলোচনা থেকে দোকানের শান্তি নষ্ট হোক, এটা চাই না। খরিদ্দার আসা কমলে আমরাই মুশকিলে পড়ব। সেই কারণেই পোস্টার দিয়েছি।’’
ওই দোকানে নিয়মিত আসেন রণজিৎ পণ্ডিত। তিনি বলেন, ‘‘জেঠুর চায়ের দোকানে সারা বছর নানা জিনিস নিয়ে আলোচনা চলে। শান্তি বজায় রাখতে এই ধরনের পোস্টার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাঁদের আর্জির মান রাখাটাই শ্রেয়।’’
বিরোধীদের দাবি, মনোনয়ন পর্ব থেকেই কিছু জায়গায় অশান্তি দেখা যাচ্ছে। ফলে ওই দোকান মালিকের ভয় পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। বিজেপির রাধাকান্ত রায় বলেন, ‘‘গ্রামের চায়ের দোকানে দেশ দুনিয়া, রাজনীতির আলোচনা তো হয়েই থাকে। তবে সেই চর্চার ফলে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে বলেই এই ধরনের পোস্টার দিয়েছেন মনে হয়।’’ বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথকুমার মালিক বলেন, ‘‘দোকান মালিকের ভাবনা তাঁর নিজস্ব। এতে রাজনীতি না টানাই ভাল। তবে এ বার ভোটে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও অভিযোগ নেই।’’