electricity bill

বন্ধ স্কুলেও বিদ্যুতের বিল ৯৮ হাজার!

যদিও বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ওই স্কুলের বিলে কোনও গোলমাল হয়নি। পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও, নানা সময়ে স্কুল খুলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৩০
Share:

সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্কুলেই তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ। উৎপাদিত বিদ্যুৎ শুধু স্কুলের খরচ সাশ্রয় করবে তাই নয়, অন্য কাজেও লাগাবে বিদ্যুৎ দফতর। এমনই উদ্দেশ্য নিয়ে বছর তিনেক আগে, পূর্ব বর্ধমানের তিনটি স্কুলে ‘সোলার প্যানেল’ বসিয়েছিল ‘ওয়েস্টবেঙ্গল রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট এজেন্সি’। করোনার জন্য দু’বছর বন্ধ থাকার পরেও, রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার পাঠানো লাখখানেক টাকার বিল দেখে মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে মাধবডিহির একলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিল দিতে না পারায়, তিন মাস আগে স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটেও দিয়েছে ওই সংস্থা। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে, সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে রায়না ২ ব্লক প্রশাসন।

Advertisement

বিডিও অনিশা যশ জানান, দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হবে।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ‘সোলার প্যানেল’ অকেজো হয়ে গিয়েছে। সৌর বিদ্যুৎও উৎপন্ন হচ্ছে না। ফলে, স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্মে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মহিদুল হক বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয়ের সঙ্গে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা নিয়ে নেবে, এই ভরসাতেই সৌর প্যানেল লাগাতে সম্মত হয়েছিলাম। ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে ৯৮,৭৮৮ টাকার বিল দেখে আমাদের মাথা ঘুরে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে সুরাহার আগেই ২৫ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়।’’ স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, দু’বছর কার্যত বিদ্যুতের ব্যবহার হয়নি স্কুলে। তার পরেও পুজোর পরে, স্কুল খুলতেই ওই বিল পাঠানো হয়।

Advertisement

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা যায়, স্কুলে পুজো বা গরমে টানা বড় ছুটি থাকে। তখন সৌরশক্তিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি চলে যায় বিদ্যুৎ দফতরের পাওয়ার গ্রিডে। কতটা বিদ্যুৎ স্কুল ব্যবহার করছে, আর কতটা দফতর নিচ্ছে তার হিসাব রাখার জন্য ‘ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট মিটার’ বা ‘নেট মিটার’ থাকে। হিসাব করে বিল মেটাতে হয়। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কতটা বিদ্যুৎ স্কুল নিয়েছে, কতটা গ্রিডে পৌঁছেছে, তার হিসাব না করেই বিল পাঠানো হয়েছে। নোটিস না দিয়েই সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি।

পড়ুয়া-শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় কম্পিউটার ক্লাস হচ্ছে না। পাম্প চলছে না বলে পানীয় জল থেকে শৌচাগারেও জল মিলছে না। স্কুল অপরিষ্কার থাকছে। অনলাইনে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

‘ওয়েস্টবেঙ্গল রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট এজেন্সি’র তরফে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ১৪টি স্কুল একই রকম সমস্যার মধ্যে পড়েছে। সমস্যা মেটাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠিও পাঠিয়েছে ওই সংস্থা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘নেট মিটার’ থাকার পরেও, অস্বাভাবিল বিল যাচ্ছে উপভোক্তাদের কাছে। এতে অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদনে বাধা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।

যদিও বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ওই স্কুলের বিলে কোনও গোলমাল হয়নি। পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও, নানা সময়ে স্কুল খুলেছে। বিদ্যুৎ সংস্থার বিভাগীয় আধিকারিক (বর্ধমান দক্ষিণ) মহম্মদ সোহেল হোসেনের দাবি, ‘‘অভিযোগ পেয়ে, স্কুলে পরিদর্শন করা হয়েছে। গ্রিডে আসা বিদ্যুৎ বাদ দিয়েই বিল পাঠানো হয়েছে।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement