‘কাটমানি’ বিতর্কে জুড়ল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরি থেকে শুরু করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা কাটমানি নিয়েছেন বাসুদেববাবু। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০০:২৫
Share:

‘কাটমানি’ ফেরতের বিক্ষোভে জড়িয়ে গেল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement

মঙ্গলবার কাটোয়া শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এক নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে পোস্টার পড়েছিল। বিক্ষোভও হয়। তার পরেই ওই ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ করে দেন দলের শহর সভাপতি অমর রাম। বৃহস্পতিবার কার্যালয়টি ভেঙে দিল কাটোয়া পুরসভা।

তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিযুক্ত বাসুদেব রায় পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। বাসুদেববাবুর এলাকার কার্যালয়টি অমর রামের ‘দখলে’ যাওয়ায় এই পদক্ষেপ, দাবি তাঁদের। যদিও পুরসভার দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই কার্যালয়টি ভাঙা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, উদ্বোধনের সময় অসুবিধের কথা ভাবা উচিত ছিল। এখন কাটমানির নামে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু করেছেন নেতারা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরি থেকে শুরু করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা কাটমানি নিয়েছেন বাসুদেববাবু। অভিযোগ রয়েছে তাঁর ভ্রাতৃবধূ তথা ওই এলাকার কাউন্সিলর মিঠু রায়ের নামেও। সরকারি প্রকল্পের টাকায় নির্মিত বাড়িতে বাতানুকূল যন্ত্র থাকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এরপরেই বুধবার ওই ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ করে দেন তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমর রাম। তিনি দাবি করেন, ‘‘কার্যালয়ে বসে অনৈতিক কাজ চলছে। তাই সাত দিনের জন্য তালা ঝোলানো হল।’’ পরের দিনই কার্যালয়টি ভেঙে দেয় পুরসভা।

পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভার জায়গায় তৈরি ওই দলীয় কার্যালয়টির জন্য পাড়ার বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। তাই ভেঙে দেওয়া হল।’’ বাসিন্দারা অসুবিধার কথা জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলেও তাঁর দাবি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০১৬-র ১৩ মার্চ কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন মন্ত্রী তথা দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রবিবাবু, অমরবাবু। কার্যালয়ের বাইরের ফলকে তিন জনের নামও রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতে অসুবিধা হবে এমন জায়গায় কার্যালয় তৈরি হল কেন! আর হলেও এত দিন তা ভাঙা হয়নি কেন।

কাটোয়ার কংগ্রেস নেতা শুভাশিস সামন্তের দাবি, ‘‘কাটোয়া শহরের অলিতে গলিতে জবরদখল করে গজিয়ে উঠেছে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। ওগুলোও কি এ বার ভাঙা হবে?’’ বিজেপি নেতা অনিল দত্ত বলেন, ‘‘নিজের উদ্বোধন করা কার্যালয় নিজেকেই ভাঙতে হচ্ছে? তৃণমূলের দুর্দিন তো দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।’’

যদিও রবিবাবুর দাবি, ‘‘উদ্বোধনের সময় ওই অসুবিধার কথা বোঝা যায়নি। এলাকায় জনবসতি বাড়ছে। তাই স্থানীয় লোকজনের সুবিধার কথা ভেবে এটা করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement