দিদি যেতেই হামলার অভিযোগ

শহরের রাজপথ কার্যত স্তব্ধ করে কিছুক্ষণ আগেই রোড-শো করে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি শহর ছাড়ার পরেই ‘আক্রান্ত’ হল সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০০
Share:

আইনুল হকের গাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র।

শহরের রাজপথ কার্যত স্তব্ধ করে কিছুক্ষণ আগেই রোড-শো করে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি শহর ছাড়ার পরেই ‘আক্রান্ত’ হল সিপিএম। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের জোট প্রার্থী, সিপিএমের আইনুল হককে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মার-পাল্টা মারে সিপিএম এবং তৃণমূলের সাত জন জখম হয়েছেন।

Advertisement

সব মিলিয়ে ভোটের তিন দিন আগে বর্ধমান শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠল। এ দিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বর্ধমান শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাহচেতন এলাকায় ওই ঘটনার পরেই বর্ধমান থানায় বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। পুলিশ ঘটনার পরেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে, যাঁরা এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত।

সিপিএমের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর মিছিল শেষ হওয়ার পর তৃণমূলের ৫০-৬০ জন দল বেঁধে ফিরছিলেন। সেই সময় ওই এলাকায় জোটেরও প্রচার চলছিল। তখন রাস্তার একটা দিক আটকে দিয়ে তাঁদের উপর তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। লাঠি-রড নিয়ে প্রচার-গাড়ির উপর প্রথম চড়াও হয় হামলাকারীরা। তার পরে কর্মী-সমর্থকদের বেধড়ক মারধর।

Advertisement

সেই সময় গাড়ি থেকে রাস্তায় নেমে পড়েন আইনুল হক। তাঁর কথায়, “আমি এগিয়ে গিয়ে ওগের বলি, কর্মীদের মারছ কেন? আমাকে মারো। আমাকে খুন করে দেওয়ারও হুমকি দেয় তৃণমূলের ছেলেরা। তখন আমি বলি, তোমাদের সামনেই তো দাঁড়িয়ে আছি খুন কর। এ ভাবে রুখে দাঁড়াতেই তারা পালিয়ে যায়।” সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হয়ে তাদের ৫ জন কর্মী গুরুতর জখম অবস্থায় বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে বচসা হয়। সেখান থেকে প্রথমে হাতাহাতি, তার পরে সংঘর্ষ হয়। প্রচারের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা অবশ্য ঘটেছে। ঠিক সময়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়। যদিও আইনুল হকের অভিযোগ, “ঘটনাস্থলে দু’জন পুলিশকর্মী থাকলেও তাঁরা সম্পূর্ণ দাঁড়িয়েছিলেন। ওই জায়গায় আমি প্রায় এক ঘণ্টা ছিলাম। কিন্তু কোনও পুলিশ আসেনি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে কোথাও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী শহরে ঘুরে যাওয়ার পরেই আমাদের উপর আক্রমণ হল। তৃণমূল নেত্রী কী নির্দেশ দিয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিল।”

তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, ওই এলাকায় তাঁদের পথসভা চলছিল। সেই সময় সিপিএমের মিছিল থেকে প্রথমে কটূক্তি করা হয়। সেই প্ররোচনায় পা দিচ্ছে না দেখে সিপিএম পোস্টার ছিঁড়তে থাকে, প্রতিবাদ করতেই তাঁদের উপরেই ‘হামলা’ করা হয়। তাতে তাঁদের দু’জন আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দলের বর্ধমান জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমাদের পথসভা চলছিল। সেই সময় সিপিএমের মিছিল থেকে আমাদের দলের পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছিল। এর প্রতিবাদ করতেই আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।” ঘটনার পরেই পুলিশবাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement