আটক সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র
রেশনের সামগ্রী ‘পাচার’ করার অভিযোগে এক রেশন ডিলারকে ধরেন গ্রামবাসী। মেমারির বিজুর ২ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা খাদ্য দফতর ও ব্লক অফিসে অভিযোগ জানান। মেমারি ২ খাদ্য পরিদর্শক মেমারি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বলে দাবি। পুলিশ অবশ্য জানায়, এখনও অভিযোগ মেলেনি। কাউকে আটকও করা হয়নি। ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চাপান-উতোর দেখা দিয়েছে।
বিজুর ২ পঞ্চায়েতের বেনেগ্রামের এক রেশন ডিলার শনিবার রাত ৮টা নাগাদ রিকশায় করে জিনিস পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর একাংশের। তাঁদের দাবি, ওই রেশন ডিলার তাঁদের কাছে দোষ স্বীকার করেন। যদিও জয়দেব মুখোপাধ্যায় নামে ওই ডিলার তা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকে রেশন নেন না। তাঁদের সামগ্রী উপভোক্তাদের কাছে কিনে নিয়েছি। সেই সামগ্রী বাজারে পাঠানোর সময়ে গ্রামের লোকজন ঝামেলা পাকিয়েছে। আমার খাতায় কোনও গরমিল নেই।’’
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ভোটের আগে থেকেই রাতে রেশন দোকান থেকে রিকশায় করে সামগ্রী গ্রামের বাইরে পাঠানো হচ্ছিল। পরে জানা যায়, ওই সব সামগ্রী সাতগেছিয়া বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তাঁরা হাতেনাতে ধরার জন্য তৈরি ছিলেন। শনিবার রাতে রিকশায় রেশন-সামগ্রী দোকানের বাইরে আসতেই তাঁরা ধরে ফেলেন। এলাকার বাসিন্দা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইলের দাবি, ‘‘ওই রেশন ডিলার বিজেপির নেতা। রেশনের সামগ্রী পাচার করতে গিয়ে তিনি গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়েছেন, এই ঘটনা লজ্জাজনক।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি জেলা খাদ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।“
গ্রামবাসীর দাবি, পাঁচ বস্তা গম (৬০ কেজির বস্তা), ২৩০ লিটার কেরোসিন পাচার করার সময়ে তাঁরা ধরে ফেলেন। পরে খাদ্য দফতর তদন্ত করে জানতে পারে, ওই সামগ্রী ছাড়াও ৬৫ কেজি আটার হিসেব পাওয়া যায়নি। খাদ্য দফতরের কর্তারা রেশন দোকান, গুদাম ‘সিল’ করে দিয়েছেন। কাগজপত্রও বাজেয়াপ্ত করেছেন। বিজুর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান বৃন্দাবন ঘোষের কথায়, ‘‘ওই রেশন ডিলার স্থানীয় বিজেপি নেতা। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
মেমারি বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের যদিও দাবি, ‘‘আমার মনে হচ্ছে, বিজেপি করায় ওঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’