প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-এর মধ্যেও কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পেয়েছে ‘অরেঞ্জ জ়োন’ পশ্চিম বর্ধমান। কিন্তু জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘লকডাউন’ শুরুর সময় থেকেই সিগারেট, মদ, গুটখা-সহ বিভিন্ন নেশার সামগ্রীর কালোবাজারি চলছে। সম্প্রতি মদ বিক্রিতে ছাড় দেওয়ায় সেখানে কালোবাজারি খানিকটা কম বলে জানান তাঁরা।
রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, অণ্ডাল-সহ জেলার নানা প্রান্তে সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে সিগারেটের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ধূমপায়ী জানান, সাধারণ ভাবে সব ধরনের সিগারেট দেড় থেকে দু’গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পাণ্ডবেশ্বর ও রানিগঞ্জের দু’জন খুচরো বিক্রেতার বক্তব্য, “আমাদের অনেকটাই বেশি দামে পাইকারি ব্যবসায়ীর থেকে সিগারেট কিনতে হচ্ছে। ফলে, সামান্য লাভ রাখতে হলে আমাদের এই দামেই বিক্রি করতে হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রানিগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, লকডাউনের জন্য পরিবহণে ব্যাপক প্রভাব পড়ায় সিগারেটের জোগান কার্যত নেই। ফলে, মজুত সামগ্রী থেকেই কাজ চালাতে হয়েছে। তাই দামও বেড়েছে।
যদিও জেলা প্রশাসনের মতে, লকডাউন-এর এই পর্বে সিগারেট, বিড়ির (দাম অপরিবর্তিত) দোকান এক সঙ্গে অনেকগুলি থাকলে খুলতে পারবে না। কিন্তু আলাদা ভাবে বেশ কিছুটা দূরে দূরে দোকানগুলি থাকলে তা খোলা যাবে।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, এক ধাক্কায় গুটখার দামও অনেকটাই বেড়েছে। তাঁরা জানান, ‘সুযোগ’ বুঝে প্যাকেটের মাপ অনুযায়ী গুটখার দর দ্বিগুণ হয়েছে। যেমন, পাঁচ টাকার প্যাকেট হয়েছে দশ টাকার, দশ টাকার প্যাকেট হয়েছে কুড়ি টাকা করে বিক্রি হচ্ছে এই মুহূর্তে।
তা ছাড়া, এই মুহূর্তে মদের দোকান অনেকাংশেই খুলে গেলেও এর পূর্বে মদের কালোবাজারিও ব্যাপক মাত্রায় ঘটেছে বলে ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা। মদের দোকান না খোলার আগে পর্যন্ত তিন, এমনকি, চার গুণ দামেও মদ বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ। অজয় ও দামোদর নদ পেরিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকেও মদ ঢুকেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্রেতাদের একাংশ জানান।
বিষয়টি নিয়ে আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট তুহিন নাগ বলেন, “জেলা জুড়ে হাজার বারেরও বেশি অভিযান চালিয়ে বৈধ ১০২ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গুড় থেকে তৈরি মদ ও চাল থেকে তৈরি পচাই উদ্ধার হয়েছে ১৩৯ লিটার। পচাই তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯৫ লিটার কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়েছে। মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
সিগারেট প্রভৃতির ‘কালোবাজারি’ প্রসঙ্গে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির আশ্বাস, “অভিযোগ পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।”