Sand Mining

সেতুর অদূরে বালি তোলার অভিযোগ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে পাণ্ডবেশ্বর ঘাটের কাছে সেতুটি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০১:৩১
Share:

এখানেই বালি তোলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

বৈধ ঘাট থেকে বর্ষায় বালি তোলা বন্ধ বলে আগেই জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের অজয়ে সেতুর কাছে বালি চুরির অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশ। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে সম্প্রতি ই-মেল করে অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি-ও। বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) কৌশিক সমাদ্দার বলেন, “মঙ্গলবার সকালে দ্রুত বালি চুরি বন্ধে পদক্ষেপ করার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং পাণ্ডবেশ্বর থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির প্রতিক্রিয়া, ‘‘পাণ্ডবেশ্বরের ওই এলাকায় অবৈধ ভাবে বালি তোলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এর পরে, উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে পাণ্ডবেশ্বর ঘাটের কাছে সেতুটি রয়েছে। দিনভর ওই রাস্তা দিয়ে যাত্রিবাহী গাড়ি, মালবাহী যানবাহন চলাচল করে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম যোগসূত্র এটি। অথচ, সেতু থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে কিছু দিন আগে নদের পাড় ঘেঁষে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে পলি ও আগাছা সাফ করে বালি কাটার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের। তাঁদের আরও অভিযোগ, সেই ‘কাজ’ হয়ে যাওয়ার পরে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অবৈধ ভাবে বালি কেটে পাচার করা হচ্ছে। এর জেরে অজয়ের গতিপথ পাল্টে বিপত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীর একাংশ।

এলাকাবাসী জানান, ওই এলাকায় ইসিএল-এর বৈধ একটি বালিঘাট আছে। প্রশাসনের নির্দেশে সেখানে বর্ষায় বালি কাটা বন্ধ। কিন্তু ওই ঘাট থেকে কয়েকশো মিটার দূরে অবৈধ ভাবে বালি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পলিমাটি কাটার জেরে অন্তত তিন জায়গায় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, বছরখানেক ধরে বীরভূমমুখী অজয়ের স্রোতের গতিপথ কিছুটা পাল্টে বর্ধমানমুখী হয়েছে। ফলে, মকরস্নানের দিন পাণ্ডবেশ্বরের ওই এলাকায় অনেকেই আসেন। অবৈধ কারবারের জেরে সেই সময়ে জলে নামলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেতু থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই কারবার চলছে। দলের তরফে বালি চুরি বন্ধের আর্জি জানিয়ে ই-মেল করা হয়েছে বিডিও-কে (পাণ্ডবেশ্বর)। বালির কারবার বন্ধ না হলে যে কোনও সময়ে বিপদ ঘটতে পারে।’’ সিপিএম নেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বালির অবৈধ কারবার চলতে থাকলে সেতু পর্যন্ত কমজোরি হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিপদ আরও বাড়বে।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (পাণ্ডবেশ্বর) নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রশাসন নিশ্চয় খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করবে।’’

বালির ‘অবৈধ’ কারবারের জেরে বিপত্তির ঘটনা এই এলাকায় নতুন কিছু নয়। স্থানীয় বাসিন্দা দীপক পাল জানান, বছর পাঁচেক আগে ‘অবৈধ’ ভাবে বালি কাটার জেরে নদীখাতে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের।

কিন্তু এই ‘কারবার’ চালাচ্ছে কারা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, এই কারবারে জড়িতেরা প্রত্যেকেই স্থানীয়। তাদের মাথায় হাত রয়েছে ‘ক্ষমতাবান’দের। তবে ‘ক্ষমতাবান’ বলতে কাদের বোঝাতে চাইছেন, তা ভাঙেননি তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement