প্রতীকী ছবি।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর সংযোগের প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ডিলার অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠছে পূর্ব বর্ধমানে। ইতিমধ্যে জেলা খাদ্য দফতর কয়েকজন ডিলারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে বর্ধিত সভা করে ডিলারদের সতর্ক করছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’ও। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ মাস থেকেই রেশন দোকান খোলার নির্দিষ্ট সময়ে ‘ই-পিওএস’ যন্ত্রও অনলাইনে চালু রাখতে হবে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান, কাটোয়ার বেশ কিছু ডিলারের বিরুদ্ধে আধার সংযুক্তির নামে উপভোক্তাদের হয়রান করার অভিযোগ উঠেছে। সংযুক্তিকরণ নেই জানিয়ে রেশনের জিনিস না দেওয়া, বার বার ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। যদিও খাদ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, আধার সংযুক্তিকরণ থাক বা না থাক, উপভোক্তাকে রেশনের দ্রব্য দিতে বাধ্য ডিলার। কোনও গ্রাহকের আধার সংযুক্তি হয়ে গেলে ‘বায়োমেট্রিক’ পদ্ধতি অবলম্বন করবেন ডিলার। তাতে কাজ না হলে এক মিনিটের মধ্যে মোবাইলে ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ (ওটিপি) যাবে। তাতেও কাজ না হলে অনলাইনে নথিভুক্তির মাধ্যমে ওই গ্রাহককে রেশন দ্রব্য সরবরাহ করতে পারবেন ডিলার।
জেলার খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, “এই সব নির্দেশিকা না মানা, আধার সংযোগের নামে উপভোক্তাদের হয়রানি করার অভিযোগে রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।’’ বর্ধমানে সাত জনকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছিল। তাঁদের উত্তরে খাদ্য দফতর ‘সন্তুষ্ট’ হতে পারেনি। সে কারণে ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্য নিয়ামক। কাটোয়াতেও দু’জন ডিলারকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে খাদ্য দফতর। কালনা মহকুমাতেও এক জন ডিলার শাস্তির মুখে পড়েছেন।
অনেকেই আছেন যাঁদের রেশন কার্ড রয়েছে, অথচ, রেশন নেন না। অথচ, সরকারের তরফে তাঁদের জন্য বরাদ্দ আসে। অভিযোগ, ওই উদ্বৃত্ত রেশন অনেক সময়েই ঘুরপথে খোলা বাজারে চলে যায়। এ বার ওই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চায়ছে প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, আধার সংযোগ হয়ে গেলে কোন কার্ডে রেশন তোলা হচ্ছে, তা সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব। তাতে ‘অব্যবহৃত’ কার্ডগুলি একটা সময়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।
পাশাপাশি, বরাদ্দের পুরো তথ্য যেহেতু অনলাইনে মিলবে, তাতে কারচুপিও এড়ানো যাবে সহজে। খাদ্য দফতরের দাবি, জেলায় ৫৪ লক্ষ রেশন কার্ডের মধ্যে ১৮ লক্ষ রেশন কার্ডে আধার সংযোগ করা ছিল। গত দু’মাসে কর্মীরা দু’বার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আরও ১৬ লক্ষ রেশন কার্ডে আধার সংযোগ করেছেন। বাকি ২০ লক্ষ কার্ডের জন্যও বিভিন্ন জায়গায় শিবির করতে উদ্যোগী হয়েছে খাদ্য দফতর। আবিরবাবু বলেন, “দুয়ারে সরকারের শিবিরেও আধার সংযোগ করা যাবে। প্রতিটি শিবিরে দু’জন করে লোক থাকবেন।’’
রেশন ডিলারদের সংগঠনের জেলা সম্পাদক পরেশ হাজরা বলেন, “শহরাঞ্চলে এ রকম অভিযোগ উঠছে। আমরা বৈঠক করে সরকারকে সহযোগিতা করার কথা বলেছি। সতর্ক থাকার কথাও বলেছি। কেউ যদি নির্দেশ অমান্য করে উপভোক্তাদের হয়রান করেন, তা হলে দফতর কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নিলেও আমাদের কিছু বলার নেই।’’