প্রতীকী ছবি
গত বিধানসভা ভোটের আগে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় করার জন্য নেওয়া হয়েছিল প্রবীণ বাসিন্দার ঘর। কিন্তু তার পরে সেই ঘর আর ফেরাচ্ছে না তৃণমূল, এমনই অভিযোগ দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার গোপীনাথপুরের বাসিন্দা সুকুমার পালের। এমনকি ঘর চাইতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকিও শুনতে হচ্ছে বলে দাবি সুকুমারবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘আমার বয়স ৮০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। খুব মানসিক চাপে রয়েছি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুকুমারবাবুর বাড়ির বাইরের দিকে একটি ঘর রয়েছে। সেটি ফাঁকা পড়ে থাকত। এলাকায় তৃণমূলের একটি কার্যালয় রয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ভোটের সময়ে দলের কাজে ব্যবহার করার জন্য সুকুমারবাবুর কাছে ঘরটি চেয়ে আর্জি জানান। সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘পাড়ার ছেলে। তাই আমি দিয়ে দিই।’’ তাঁর দাবি, তাঁর ছেলেকে এলাকার একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এর পরে কেটে গিয়েছে তিন বছর। সুকুমারবাবু অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে কাজ পাননি। ঘর ফেরত চাইলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা তাতে রাজি হননি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বারবার বলেও কোনও ফল হয়নি। উল্টে, আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, বেশি চাপাচাপি করলে এখানে বাস করতে দেবে না। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর স্ত্রী আরতিদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী অসুস্থ। এমন মানসিক চাপে থাকলে বড় বিপদ ঘটতে পারে। আতঙ্কে রয়েছি।’’
কোকআভেন থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসীর একাংশ। সুকুমারবাবুর দাবি, তিনি সেপ্টেম্বরে থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। তিন তৃণমূল কর্মীর নামে জোর করে ঘর দখলে রাখার অভিযোগ করেছিলেন। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। পুলিশ অবশ্য জানায়, সমস্যা মেটাতে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ভাবে ঘর দখল করা তৃণমূলের নীতি নয়।’’ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দেন তিনি। দলের দুর্গাপুর ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি ভীমসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিষয়টি মিটে যাবে।’’