শক্তিগড়ে জলে পড়ে রয়েছে পাকা ধানের গোছা।
বারবার ফসল তোলার মুখে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আর তার জেরে জেলার নানা প্রান্তের চাষিরা সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, গত আট মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে এই নিয়ে অন্তত চার বার ফসল ঘরে তুলতে গিয়ে সমস্যা হল। কৃষি দফতর ‘বুলবুলের’ জেরে সে ভাবে ক্ষতি হবে না বলে দাবি করলেও চাষিরা কিন্তু এখনও পুরোপুরি নিঃসংশয় নন। কৃষি দফতর অবশ্য জানায়, ফসলে ক্ষতি থেকে বাঁচতে বেশি করে ‘ফসল বিমা’ করাতে হবে চাষিদের।
চাষিরা রীতিমতো তথ্য দিয়ে গত আট মাসের চাষে সমস্যার কথা জানিয়েছেন—
প্রথমত, ফেব্রুয়ারিতে আলু, পেঁয়াজ ওঠার মুখে বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হন কালনা মহকুমার বহু চাষি। অনেককেই পচে যাওয়া ফসল তোলার চেষ্টা না করে পরের চাষের প্রস্তুতি শুরু করতেও দেখা যায়। দ্বিতীয়ত, জুলাই, অগস্টে ধান চাষের জন্য ভাল বৃষ্টি জরুরি ছিল। তা হয়নি। আবার, সেই সময়ে জলের অভাবে পাট পচাতে সমস্যায় পড়ার কথা জানান চাষিরা। তৃতীয়ত, কালীপুজোর আগে ফের নিম্নচাপের জেরে অকাল বৃষ্টি হয়। এর ফলে পূর্বস্থলী-সহ নানা এলাকায় আনাজ চাষে প্রভাব পড়ে। পূর্বস্থলীর চাষি ব্রজেন কর্মকার বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুমে ভাল দাম মেলে বলে বাড়তি খরচ করেও ফুলকপি, বাঁধাকপি-সহ নানা আনাজের চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু এই বৃষ্টি সব তছনছ করে দেয়।’’ চতুর্থত, চলতি সময়ের বৃষ্টিতে আনাজ চাষে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা চাষিদের। পেঁয়াজ চাষিরা জানান, গত মাস দুয়েকের মধ্যে অন্তত তিন বার অকাল বৃষ্টির কারণে চারা নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া, কালনা, মন্তেশ্বর, ভাতার, মেমারি, জামালপুর-সহ নানা এলাকায় ধান গাছ লুটিয়ে পড়েছে মাটিতেই।
এই পরিস্থিতিতে প্রকৃতির মার থেকে খানিক বাঁচতে কৃষি দফতর জোর দিচ্ছে ফসল বিমার উপরে। জেলার এক সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে চাষিদের আরও বেশি করে ফসল বিমার দিকে ঝুঁকতে হবে।’’