—ফাইল চিত্র
নাবালিকা নির্যাতনের পৃথক ঘটনায় বর্ধমান ও কালনায় চিকিৎসা ও তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। বুদবুদের বছর বারোর এক নির্যাতিতা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে দেখতে এসে অগ্নিমিত্রার দাবি, মেয়েটি হাসপাতালে কোনও আলাদা শয্যা পায়নি। চিকিৎসাও ‘ঠিকমতো’ হচ্ছে না। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে কথা মানতে চাননি। সন্ধ্যায় কালনায় গিয়ে এক নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অগ্নিমিত্রা।
বৃহস্পতিবার বুদবুদের মৌগ্রামে ওই বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার মেয়েটিকে ভর্তি করানো হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে। শনিবার দুপুরে তার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, ‘‘মেয়েটি কোনও বেড পায়নি। অন্য এক প্রসূতির বেডের কোণে সে জড়োসড় হয়ে বসে রয়েছে। তার চিকিৎসাও ঠিকমতো হচ্ছে না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী করছেন। তিনি বলছেন, এখানে সেরা চিকিৎসা হচ্ছে। কিন্তু, এই তো স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল। এক জন ধর্ষিতা চিকিৎসা পাচ্ছে না!’’ রাজ্যের অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূলের লোকজন জড়িত থাকে বলেও দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘উনি (অগ্নিমিত্রা) এসেছিলেন, তা জানি না৷ আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। প্রসূতি বিভাগে শয্যার কোনও সমস্যা নেই। নির্যাতিতা কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে, তাঁদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়। কেন এই অভিযোগ করা হচ্ছে, জানি না।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি নেই। মিথ্যা কথা বলে বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন ওঁরা।’’ তৃণমূলের গলসি ১ ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ঘটনার পরেই পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’’
এ দিনই সন্ধ্যায় কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের সুভাষপল্লি এলাকায় এক নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়িতে যান অগ্নিমিত্রা। অক্টোবরে বছর এগারোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, ‘‘অভিযুক্তের বাবা তৃণমূলের নেতা। মেয়েটি যাতে বিচার পায়, সে জন্য আমরা আইনি লড়াই লড়ব।’’ তাঁর আরও দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তৃণমূলের নেতারা এ দিন মেয়েটিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রধান তাপস সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। অভিযুক্ত যুবকের পরিবার তৃণমূল নয়, বিজেপির সঙ্গে যুক্ত।’’
কালনার আনুখাল পঞ্চায়েতের খরসডাঙা গ্রামে মৃত এক কিশোরীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন অগ্নিমিত্রা। ২৫ এপ্রিল ওই কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল। অগ্নিমিত্রার দাবি, মেয়েকে খুন করা হয়েছিল বলে তার পরিবারের সন্দেহ। কিন্তু পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করেনি। কালনা থানার যদিও দাবি, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।