মিঠেপুকুরে হামলায় ফের আতঙ্ক

বর্ধমান সদর স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সমিতির মিঠেপুকুর শাখার সম্পাদক হেমন্ত কর্মকারের কথায়, “২০১৫ সালের ওই ঘটনার সঙ্গে শনিবারের সে ভাবে মিল নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০২:১৬
Share:

বর্ণনা দিচ্ছেন সুভাষবাবু। নিজস্ব চিত্র

বছর দেড়েক আগে শীতের এক রাতে বর্ধমান শহরের মিঠেপুকুর এলাকার পরপর দুটি দোকানে লুঠপাট চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার সন্ধ্যায় ওই দুই দোকানের কাছে আর একটি সোনার দোকানে ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। কিন্তু ওই দোকানের মালিক সুভাষ চন্দ্র রুখে দাঁড়ানোয় সফল হয়নি হামলাকারীরা। তবে এই ঘটনা পুরনো স্মৃতি উস্কে দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

Advertisement

বর্ধমান সদর স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সমিতির মিঠেপুকুর শাখার সম্পাদক হেমন্ত কর্মকারের কথায়, “২০১৫ সালের ওই ঘটনার সঙ্গে শনিবারের সে ভাবে মিল নেই। কিন্তু ভর সন্ধ্যায় তিন যুবক যে ভাবে দোকানে ঢুকে ছিনতাই করার সাহস দেখিয়েছে, তাতে তো একটু ভয়ই লাগছে।” সমিতির হিসেবে, মিঠেপুকুরের এক চিলতে গলির ভিতর সবমিলিয়ে ৪৭৫টির মতো দোকান রয়েছে। তার মধ্যে গয়নার দোকানই রয়েছে ২২৭টি। মিঠেপুকুরের ব্যবসায়ীদের কথায়, শনিবার বিকেলের পরে বেশির ভাগ দোকানেরই ঝাঁপ বন্ধ থাকে। বিশেষ কাজে হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খোলা থাকে। তাঁরাও ন’টার আগে দোকান বন্ধ করে দেন। তবে যে দু’এক জন দোকান খোলা রাখতেন তাঁরাও আর সাহস পাবেন বলে মনে হয় না।’’

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সাড়ে আটটা নাগাদ বিসি রোড দিয়ে একটি মোট বাইকে করে তিন জন ‘মোদক মার্কেটে’র সামনে এসে দাঁড়ায়। দু’জন ব্যাগ হাতে হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে ঢুকে যায়। আর এক জন মোটরবাইকটি একটু পিছিয়ে নিয়ে এসে মার্কেটের সামনে দাঁড়ায়। মিনিট দু’য়েকের মধ্যেই মোটরবাইকটি এলাকা ছাড়ে। তারপরেই ভিতরে থাকা দু’জন দুষ্কৃতী রাস্তায় এসে বিসি রোড ধরে ছুটতে থাকে। ওই গয়নার দোকানের মালিক সুভাষ চন্দ্রের কথায়, “আমি রুখে দাঁড়িয়ে ঘুষি মারতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। সমস্ত ঘটনাটাই খুব দ্রুত ঘটেছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বাজারের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ থাকার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা।” তবে পুলিশের কাছে তিনি কোনও অভিযোগ করেননি। তবে স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সমিতির তরফে ওই সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। ওই ফুটেজ ধরেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, দেড় বছর আগে অন্তত ১৫ জনের দল দুটি দোকান লুঠ করেছিল। পিক আপ ভ্যানে করে বড় সিন্দুক নিয়ে পালিয়েছিল তারা। তারপরেই ওই এলাকায় ৮টি সিসি (‌ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা, রাতে নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করে সমিতি। শুধু তাই নয়, পুলিশও নিয়মিত টহল দেয়। তারপরেও এই ঘটনা ব্যবসায়ীদের চিন্তায় ফেলেছে। স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্ত প্রামাণিক অবশ্য ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছেন। তাঁর কথায়, “একটা ঘটনার পরে আতঙ্ক একটু থাকে। শনি, রবিবার সন্ধ্যার পরে এলাকায় টহল দেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করব।” পুলিশ তরফে জানানো হয়েছে, সন্ধ্যায় টহল দেওয়া শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement