শহরের এমন নানা জলের ট্যাঙ্ক নিয়েই বাড়ছে চিন্তা। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা। তার পরে সল্টলেক। পরপর দু’জায়গায় জলের ট্যাঙ্ক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। এর পরে নড়ে বসেছে দুর্গাপুর পুরসভা। শহরের সব ওভারহেড জলের ট্যাঙ্কের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি পুরসভার কর্তাদের। সে জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের মেয়র পারিষদ পবিত্র চট্টোপাধ্যায়।
কিছু দিন আগে সারেঙ্গায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের গড়া একটি জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ে। কার গাফিলতিতে এই ঘটনা, তার তদন্তে দফতরের তরফে কমিটি গড়া হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে সল্টলেকের সিসি ব্লকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের আবাসনে হঠাৎ বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে একটি জলের ট্যাঙ্ক। প্রায় তিন হাজার লিটার জলধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাঙ্কটি দীর্ঘদিন ঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ। দু’টি ঘটনাতেই হতাহত কেউ হননি ঠিকই, তবে বিপদের সম্ভাবনা ছিল যথেষ্ট।
দুর্গাপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় মোট ওভারহেড ট্যাঙ্ক রয়েছে ২৯টি। অধিকাংশই কয়েক দশকের পুরনো। মাঝেমাঝে সংস্কার হয়, রং করা হয়। তবু একেবারে ঝুঁকি নেই, তা বলা যায় না বলে মনে করছেন পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। সম্প্রতি সিটি সেন্টার এলাকায় একটি ট্যাঙ্কের সিঁড়ির অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে। খবর পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানান মেয়র পারিষদ পবিত্রবাবু।
শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গিয়েছে, কিছু পুরনো ট্যাঙ্কের সংস্কার করে নীল রং করা হয়েছে। যেমন, বেনাচিতির ৫৪ ফুট রোড এলাকার ট্যাঙ্কটি কয়েক মাস আগে সংস্কার করে রং করা হয়েছে। আবার কিছু ট্যাঙ্কের বিবর্ণ দশা। যেমন, সিটি সেন্টারের কমার্শিয়াল মার্কেট লাগোয়া ট্যাঙ্কটি। ১ নম্বর ওয়ার্ডে কমলপুরের ট্যাঙ্কটির মতো কয়েকটির আবার আয়ু এখনও দেড় দশক পেরোয়নি। সেগুলির পরিস্থিতি ভাল বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
মেয়র পারিষদ পবিত্রবাবু জানান, সারেঙ্গা বা সল্টলেকের মতো পরিস্থিতি যাতে দুর্গাপুরে না তৈরি হয়, সে জন্য সব ওভারহেড ট্যাঙ্কেরই স্বাস্থ্যপরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জন্য একটি কমিটি গড়া হবে। সেই কমিটি দ্রুত শহরের সব ট্যাঙ্কের স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখবে। মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে পুরসভা এলাকার ট্যাঙ্কগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয়। তবু এক বার সার্বিক ভাবে সব ট্যাঙ্কের পরিস্থিতি দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’