মহম্মদ এক্রামুল হকের কাছ থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন। নিজস্ব চিত্র
রোগীর অভিযোগ পেয়ে দুই ‘চিকিৎসক’কে বৃহস্পতিবার ডেকে পাঠালেন কাটোয়ার ভারপ্রাপ্ত এসিএমওএইচ রতন শাসমল। দু’জনেরই চিকিৎসা ও পড়াশোনা সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
কাটোয়ার মণ্ডলপাড়ায় চেম্বার খুলে মাস ছয়েক ধরে চিকিৎসা করছেন মুর্শিদাবাদের সালারের বাসিন্দা মহম্মদ এক্রামুল হক। আগে পাটুলিতে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেছেন তিনি। নিজের প্রেসক্রিপশনে ‘বিআইএএম’ (ক্যাল) ও ‘ডিএইচএ’ (দিল্লি) লেখেন। নিজেকে ‘মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার’ হিসাবে পরিচয় দিলেও প্রেসক্রিপশনে ‘ডক্টর’ লেখা থাকে না। এক্রামূলের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের (কাটোয়া) কাছে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ হওয়ার পরে তিনি তা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেন। গত ১৬ ই অক্টোবর চিঠি দিয়ে তাঁকে এ দিন দেখা করতে বলেন ভারপ্রাপ্ত এসিএমওএইচ।
একই ভাবে অন্য এক রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে কেতুগ্রামের বালুটিয়ার বাসিন্দা এবং নিজেকে দাঁতের চিকিৎসক হিসাবে দাবি করা সনৎ সরকারকে এ দিনই নথি সহ দেখা করতে বলা হয়। এ দিন দুপুরে দু’জনেই স্বাস্থ্যকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। বছর আটান্নর সনতের দাবি, কান্দরা ও বালুটিয়ায় তিনি বছর পঁয়ত্রিশ ধরে দাঁতের চিকিৎসা করছেন। নিজের প্রেসক্রিপশনে ‘বিডিএএস’ (ক্যাল) লেখেন তিনি। এ দিন তিনিও তাঁর চিকিৎসা ও পড়াশোনা সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা দেন।
এক্রামুল ও সনৎ দু’জনই আত্মপক্ষ সমর্থনে স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত বিবৃতি দেন। দু’জনের নথি যাচাই করে দেখার পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান রতনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে নথি দেখে মনে হচ্ছে, সনৎ ডেন্টাল অ্যাটেনডেন্ট হিসাবেই কাজ করতেন। অস্ত্রোপচার করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর বয়ানও স্পষ্ট নয়।’’ অন্য দিকে, এক্রামুলের দাবি, তিনি দূর শিক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। কিন্তু, কোন কলেজ থেকে ও কোন বিষয়ে তিনি স্নাতক হয়েছেন, তা জানাতে পারেননি। যে সংস্থা থেকে তিন বছরের অল্টারনেটিভ মেডিসিনের কোর্স করেছেন বলে দাবি করেছেন এক্রামুল, প্রাথমিক ভাবে দেখে সেটির অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
এসিএমওএইচ জানান, সমস্ত নথি পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পুলিশ-প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে।