শনিবার রাতে এই রাস্তাতেই গুলি চলে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
গুলি চলার ঘটনার পরে আতঙ্কে ভুগছেন কুলটির বাসিন্দারা। সন্ধ্যা নামলেই শহরের বেশ কিছু রাস্তায় চলাফেরা করা মুশকিল হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ তাঁদের। কিছু এলাকায় বহিরাগতদের দখলে চলে যাওয়ার পরে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা আরও বেড়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, পরিবহণ ব্যবসায়ীর গাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে।
শনিবার রাতে গাড়িতে বাড়ি ফেরার সময়ে কুলটির বাবুপাড়া এলাকার রাস্তায় তাঁর গাড়ি তাক করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেন পরিবহণ ব্যবসায়ী মমতাজ খান। এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার আসানসোল আদালত ধৃতদের দু’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি কার্তুজের খোল উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৭ সালে ওই এলাকাতেই গুলিতে খুন হন এক বৃদ্ধা। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তায় কোনও আলো নেই। সন্ধ্যা নামলেই এলাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। এই অঞ্চলটি মূলত কুলটির ইস্কোর আবাসন কলোনি। ২০০৩ সালে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে শ্রমিক-কর্মীরা চলে গিয়েছেন। এখন সেই সব আবাসনের বেশিরভাগই বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আশপাশে বস্তিও গজিয়ে উঠেছে। এখন আর এই জায়গার পরিচর্যা করেন না ইস্কো কর্তৃপক্ষ। রাস্তায় আলোও লাগানো হয়নি।
বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সন্ধ্যা নামলেই নানা জায়গায় মদ্যপানের আসর বসে। বহিরাগতেরা ভিড় জমায়। বাবুপাড়ার ওই রাস্তা ধরে ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতে যাতায়াত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবারের ঘটনার পরে এই রাস্তায় যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান অনেক বাসিন্দা। তাঁরা রাস্তায় আলো লাগানো ও পুলিশি টহলের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারের ঘটনার পরে ওই রাস্তায় টহল বাড়ানো হয়েছে। লাগোয়া বস্তির মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। বাসিন্দাদের দাবি, গুলি-কাণ্ডের পরে বহিরাগতদের আনাগোনা কমেছে।
আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, এই অঞ্চলের এক পাশে রয়েছে ইস্কো আবাসন। অন্য পাশে রেল আবাসন। ফলে, এলাকা পরিচর্যার দায়িত্ব ইস্কো ও রেল কর্তৃপক্ষের। তবে রেল আবাসনে কিছু কর্মী বাস করলেও ইস্কো আবাসনের প্রায় পুরোটাই বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থে সেখানে রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা চলছে।’’ তাঁর দাবি, বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে খালি আবাসনগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত ইস্কো কর্তৃপক্ষের। ইস্কো কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।