পথ দুর্ঘটনার পরে রোষ গিয়ে পড়ল খনির উপরে। অফিসে ভাঙচুর, আধিকারিক ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল সালানপুরে। পুলিশ এবং সিআইএসএফ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তবে রবিবার রাতে ওই ঘটনার পরে দীর্ঘক্ষণ উৎপাদন বন্ধ থাকে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে শ্রমিক-কর্মীদের মধ্যে। যে দুর্ঘটনার সঙ্গে খনির কোনও সম্পর্ক নেই, তার রেশ কেন তাঁদের উপরে পড়ল, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
সালানপুরের সামডি রোডে ঘটনার সূত্রপাত রবিবার মাঝ রাতে। এক পথচারীকে ধাক্কা মেরে পালায় একটি গাড়ি। খবর পেয়ে জড়ো হন আশপাশের বাসিন্দারা। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর পরেই হঠাৎ এক দল লোক স্থানীয় ডাবর খনির অফিসে হামলা চালায়। সেখানে তখন কাজ করছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা।
খনিকর্মীদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়েই এলোপাথাড়ি চড়-ঘুষি মারতে থাকে। হামলার খবর পেয়ে সামান্য দূরে থাকা এক আধিকারিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁকেও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু মারধর নয়, ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় আসবাবপত্র। প্রায় আধ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছাড়ে।
সোমবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অফিস লণ্ডভণ্ড। রাতে কাজে আসা কয়েক জন শ্রমিক-কর্মী তখনও সেখানে রয়েছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘মারধরের সময়ে ওরা দাবি করছিল, কোলিয়ারির ডাম্পার ও গাড়িগুলি রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকে বলেই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ দুষ্কৃতীরা অফিসে ঢুকে যে ভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে খনির উৎপাদন বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখেন শ্রমিক-কর্মীরা। কোলিয়ারির ম্যানেজার ইউ পি চৌধুরী বলেন, প্রায় চল্লিশ জন দুষ্কৃতী এক তরফা তাণ্ডব চালিয়েছে। ওরা কোনও কথা শুনতে চায়নি।’’ ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অজয়কুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমরা সোমবার থেকে ওই খনি চত্বরে সিআইএসএফ মোতায়েন করেছি। শ্রমিক-কর্মীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’ তিনি জানান, পুলিশেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
কিন্তু খনির সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন ঘটনায় খনির অফিসে হামলা হল কেন? জেনারেল ম্যানেজার দাবি করেন, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে এলাকার কিছু কয়লা চোর। গত কয়েক দিন ধরে ইসিএল কর্তৃপক্ষ কয়লা চুরি বন্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। কোলিয়ারির জমিতে যে অবৈধ নির্মাণ রয়েছে, সে সব ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সে জন্যই ছুতো খুঁজে এই হামলা হয়েছে।