Ration Card

রেশন-আধার সংযুক্তিতে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত

আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের কাজ এত দিন রেশন ডিলারেরা করতেন।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২১ ০৭:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে কড়া ভূমিকা নিতে চলেছে খাদ্য দফতর। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বা আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ব্যবস্থায় ফোন নম্বরও যুক্ত করে এসএমএস পরিষেবা মিলবে বলে জানা গিয়েছে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পুরো প্রক্রিয়া দু’মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য ‘ওয়েবল’ সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, “সমীক্ষা চলছে। পরে সংযুক্তিকরণ শুরু হবে।’’

Advertisement

ওই দফতর সূত্রে জানা যায়, রাজ্যে প্রায় ১০ কোটি মানুষের হাতে রেশন কার্ড রয়েছে। তার মধ্যে বায়োমেট্রিক বা আধার-মোবাইল এবং রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ হয়নি প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি উপভোক্তার। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর লকডাউনের সময়ে খাদ্যসামগ্রী বিলি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। রেশন দোকানে ‘ই-পস’ (ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেল) যন্ত্রের মাধ্যমে সংযুক্তিকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কোনও উপভোক্তার নাম থাকলে, তাঁকে সে পদ্ধতিতে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। না হলে মোবাইল নম্বরে ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) দিয়ে খাদ্যসামগ্রী নিতে হবে। দু’টি ক্ষেত্রেই উপভোক্তা যুক্ত না থাকলে তবেই পুরনো পদ্ধতিতে রেশন মিলবে। যাঁরা এখনও নতুন পদ্ধতিতে যোগ দেননি তাঁদের অগস্টের মধ্যে সংযুক্তিকরণ করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দুয়ারে রেশন প্রকল্পের নির্দেশিকা তৈরির কাজ চলছে। ১০০ শতাংশ উপভোক্তা যাতে রেশন পান, তার জন্যই পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’’

আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের কাজ এত দিন রেশন ডিলারেরা করতেন। তবে ইন্টারনেট সংযোগ, ই-পস যন্ত্রের প্রযুক্তিগত অসুবিধার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু হয়ে গেলে সব উপভোক্তা যাতে রেশন সামগ্রী পান, তা মাথায় রেখে সরকারি সংস্থাকে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে উপভোক্তাদের রেশনের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতর। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক পরেশনাথ হাজরা বলেন, “বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ছাড়া, উপভোক্তাদের হাতে রেশনের জিনিস তুলে দেওয়া হবে না, এই মনোভাব নিয়ে রাজ্য সরকার এগোচ্ছে। এই পদ্ধতি চালু হলে স্বচ্ছতা আসবে। নতুন নির্দেশিকায় আমাদের আর সংযুক্তিকরণ করতে হবে না।’’ কারও আধার কার্ড না থাকলে, তাঁদের জন্য বিশেষ শিবিরের নির্দেশও হয়েছে।

Advertisement

ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৬০ দিনের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। দু’বার করে বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তার পরেও কেউ বাকি থাকলে, পাড়ায় বা এলাকার স্কুলে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিবির করা হবে। প্রয়োজনে পঞ্চায়েত বা ওয়ার্ড অফিসেও শিবির করা যেতে পারে বলে নির্দেশ রয়েছে। বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে গিয়েও আধার সংযুক্তিকরণ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রশাসনের একাংশের অনুমান, উপভোক্তাদের এসএমএস পরিষেবা দিতে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আধার সংযুক্তিকরণের জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ হতে পারে। কিন্তু ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে স্বচ্ছতার স্বার্থে দফতর অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতেও রাজি।

পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৫৪ লক্ষ উপভোক্তার মধ্যে আধার সংযুক্তিকরণ হয়েছে ২৯ লক্ষের। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, আরও ১৮ লক্ষ উপভোক্তার সংযুক্তিকরণ করা হয়েছিল কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে কিংবা নাম-বয়স ভুল থাকার জন্য প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। খাদ্য দফতরের অন্যতম উপ-অধিকর্তা আবির বালি বলেন, “নির্দেশ মেনে সব উপভোক্তার আধার সংযুক্তিকরণ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement