দেদার মাটি চুরি, দেখলেন কর্তারা

মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে নড়ে বসল প্রশাসন। যে এলাকা থেকে নিয়মিত মাটি চুরি হচ্ছে, শনিবার কালনা ২ ব্লকের সেই পূর্ব সাতগাছিয়ায় পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি, কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০২
Share:

কালনার পূর্ব সাতগাছিয়ায় ভাগীরথীর চরে প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শনিবার নিজস্ব চিত্র

মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে নড়ে বসল প্রশাসন। যে এলাকা থেকে নিয়মিত মাটি চুরি হচ্ছে, শনিবার কালনা ২ ব্লকের সেই পূর্ব সাতগাছিয়ায় পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি, কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া।

Advertisement

এ দিন বিকেলে দুই আধিকারিকের সঙ্গে এলাকা পরিদর্শনে ছিলেন পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস সরকার, উপপ্রধান পরিতোষ মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হরেকৃষ্ণ মণ্ডল, অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সদস্য বলাই উপাধ্যায়েরা। শতপটি মালপাড়া এলাকার একটি ইটভাটা থেকে অভিযান শুরু হয়। টানা পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে কোথায় জমি থেকে মাটি কাটা হয়েছে তা দেখেন আধিকারিকেরা। চরের জমি ধরে হাঁটার সময়ে তাঁরা চাষিদের কাছে কী ভাবে মাটি চুরি হয় তা জানতে চান। চাষিরা জানান জমিতে ফসল থাকা অবস্থাতেই মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। রাত ১টা থেকে দুষ্কৃতীরা কাজ শুরু করে। কেটে নিয়ে যাওয়া মাটি এলাকার বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ করেন চাষিরা।

পরিদর্শন শেষে মহকুমাশাসক এবং বিডিও পঞ্চায়েতে একটি বৈঠক করেন। সেখানে মাটি চুরি রুখতে নানা পরিকল্পনা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চায়েতকে দ্রুত মাটি বহন করা নৌকা ও এলাকার ইটভাটা মালিকদের নিয়ে আলাদা ভাবে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়। নৌকার মালিকদের জানিয়ে দিতে হবে, মাটি কাটার জন্য ভাড়া দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইটভাটা মালিকদের জানাতে হবে, নৌকায় পরিবহণ করা বেআইনি মাটি কিনলে তাদের ‘নো-অবজেকশন’ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমাশাসক এবং বিডিও পঞ্চায়েতের কর্তাদের জানিয়েছেন, ভাগীরথীর পাড়ে মনোরম পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পিকনিকের জায়গা তৈরি করা যেতে পারে। সেখানে নৌকাবিহার-সহ নানা ব্যবস্থা থাকবে। এলাকায় রয়েছে তিনটি ভেড়ি। আরও তিনটি ভেড়ি তৈরি করে মাছ চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হবে। বিডিও জানান, দ্রুত পরিকল্পনা করে পঞ্চায়েতকে পাঠাতে হবে। তাতে যেমন লোকসমাগম বাড়বে, তেমন কর্মসংস্থানও হবে। বন্ধ হবে মাটি চুরি।

বৈঠক শেষে বিডিও বলেন, ‘‘হেঁটে পরিদর্শনের সময়ে নানা জায়গায় মাটি কেটে নেওয়ার পরিস্থিতি দেখে আমরা শিউরে উঠেছি। পঞ্চায়েতকে দ্রুত পরিকল্পনাগুলি তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, প্রশাসন মাটি কাটা রুখতে নিয়মিত অভিযান শুরু করেছে। পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকার চাষিরা জমি বাঁচাতে একটি কমিটিও তৈরি করেছেন। তাঁরা রাতে জমি পাহারা দেবেন। পঞ্চায়েত প্রধান তাপসবাবু বলেন, ‘‘দ্রুত ইটভাটা মালিক ও নৌকার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। পরিকল্পনাগুলি যাতে বাস্তবায়িত হয় সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement