Damodar River

মাঘের প্রথম দিন পিতৃতর্পণ আদিবাসীদের, লোকারণ্য দামোদরের ঘাট, সূর্যাস্তের আগেই নাচ-গান সেরে বাড়ি

মহালয়ার দিন নয়, মকর সংক্রান্তির পরদিন আদিবাসীরা পুণ্যস্নান এবং তর্পণ সারেন। তাঁরা পুণ্যস্নান করেন দামোদর নদের তেলকূপি ঘাটে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

জামালপুর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০১
Share:

পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ দামোদরে। —নিজস্ব চিত্র।

ভিড় এমন যে এক ঝলকে দেখলে মনে হবে ‘অন্য’ গঙ্গাসাগর। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে দামোদরের তেলকূপি গয়াঘাট লোকারণ্য। মঙ্গলবার ধর্মীয় রীতি মেনে মকর সংক্রান্তির পর দিন অর্থাৎ, মাঘের প্রথম দিন পুণ্যস্নান এবং পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে হাজার হাজার আদিবাসী পুণ্যার্থী সমবেত হলেন দামোদরের ঘাটে। তর্পণ সেরে আদিবাসীরা পুজোও দিলেন তেলকূপি ঘাটের মারাংবুরু মন্দিরে।

Advertisement

প্রতি বছর মাঘের প্রথম দিনে তেলকূপি গয়াঘাটে পুণ্যস্নান এবং পিতৃপুরুষের তর্পণে অংশ নেন প্রচুর পুণ্যার্থী। জামালপুরে দামোদরের পারে এ রাজ্যের বাসিন্দারা যেমন আছেন, তেমনই রয়েছেন ভিন্‌রাজ্যের আদিবাসী পুণ্যর্থীরা। ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশা থেকে আসা ওই সব মানুষ জড়ো হয়েছিলেন তেলকূপি ঘাটে। তাঁদের পুণ্যস্নান পর্ব নির্বিঘ্নে শেষ করতে মোতায়েন ছিল পুলিশ বাহিনী। ভিড় এতটাই ছিল যে দামোদরে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থাও রাখা হয়। এমনকি, দামোদরের চরে চিকিৎসা শিবিরের ব্যবস্থা রাখা হয়। পুণ্যস্নান এবং তর্পণ উৎসব আয়োজকদের পক্ষে রবীন মাণ্ডি বলেন,“বর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের কাছে গঙ্গাই সব থেকে পবিত্র। কিন্তু প্রাচীন কাল থেকে দামোদর নদকেও পবিত্র জলধারার মান্যতা দিয়ে আসছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। দামোদরের তেলকপি গয়া ঘাট এই দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ পুণ্য তীর্থভূমি। আদিবাসীরা প্রতি বছর মাঘের এক তারিখ দামোদরের তেলকূপি গয়া ঘাটে পুণ্যস্নান সারার পাশাপাশি পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণও করেন। তর্পণ সেরে তাঁরা তাঁদের আরাধ্য দেবতা মারাংবুরুর মন্দিরে পুজো দেন।”

আদিবাসী সমাজের বিশিষ্ট মানুষ, কবি, সাহিত্যিক এবং শিল্পীরাও তেলকূপি ঘাটে সমবেত হন। ধর্মীয় উপচারে আদিবাসী পুরুষ এবং মহিলারা দামোদরের বালির চরে নাচে গানে মাতোয়ারা হন। বালির চরেই রান্না করে সপরিবার খাওয়া-দাওয়া সারেন তাঁরা। আদিবাসী তর্পণ উৎসব উপলক্ষে দামোদরের বালির চরে বসে জমজমাট মেলা। রীতি অনুযায়ী, সূর্যাস্তের আগেই দামোদর ছেড়ে যে যার বাড়ির দিকে রওনা দেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement