Durgapur

নবান্নে নির্দেশের পরেই দখল তুলতে অভিযান

এডিডিএ-র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই কবি দত্ত বেআইনি দখল তোলার বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে এডিডিএ-র তৎপরতা বেড়েছে বলে শহরবাসীর একাংশের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৯:১০
Share:

দুর্গাপুরে অভিযানে উদ্ধার মদের বোতল। —নিজস্ব চিত্র।

পুর এলাকায় বেআইনি জবরদখলের বিরুদ্ধে সোমবার নবান্নের সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। সেই রাত থেকেই দুর্গাপুরে তৎপরতা শুরু হল স্থানীয় প্রশাসনে। রাতেই জাতীয় সড়কের ধারে একাধিক বেআইনি হোটেলে অভিযান হয়। মঙ্গলবার সকালে ডিপিএল টাউনশিপে অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন করা হয়। দুপুরে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) নোটিস দিয়ে এবং মাইকে প্রচার করে দখলদারদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ টাউনশিপ থানা এলাকায় এবিএল মোড় লাগোয়া জাতীয় সড়কের ধারে বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা জায়গা দখল করে একাধিক বেআইনি হোটেল দীর্ঘদিন ধরে চলছে বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে এডিডিএ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায় সেখানে। তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় বহু বিদেশি মদের বোতল। মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, ডিপিএলের কোয়ার্টার্সে অবৈধ বসবাসকারীদের বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন করছেন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলার দাবি, ‘‘পার্টির লোকেদের ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। বছরখানেক হল আছি। এ বার কী হবে ভেবে পাচ্ছি না। বিপাকে পড়ে গেলাম।’’ এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘শাসক দলের নেতাদের টাকা দিয়েই এখানে এসেছিলাম। এই গরমে বিদ্যুৎ কেটে দিয়ে গেল। কী করব জানি না।’’ যদিও আইএনটিটিইউসি-র ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যাঁরা টাকা নিয়ে লোক বসিয়েছেন তাঁরা তৃণমূলের কেউ নন। তাঁরা অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের কাছে তাঁদের নাম রয়েছে।”

এডিডিএ-র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই কবি দত্ত বেআইনি দখল তোলার বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে এডিডিএ-র তৎপরতা বেড়েছে বলে শহরবাসীর একাংশের দাবি। এ দিন এডিডিএ-র তরফে অবিলম্বে জমি দখল করে বসে থাকা লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিটি সেন্টার এলাকায় রাস্তার ধারের হোটেল, গুমটি-সহ বিভিন্ন বেআইনি নির্মাণের গায়ে নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ৩ দিনের মধ্যে উঠে না গেলে সেই সব নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে বলে তাতে জানানো হয়েছে। কবি দত্ত এ দিন বলেন, “নিজেদের স্বার্থে, সমাজের স্বার্থে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে আমাদের পক্ষে কাজ করতে সুবিধা হল।”

Advertisement

বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, “এদের বসিয়েছে কারা? তৃণমূল নেতারা টাকা নিয়েছেন। এখন অভিযান করতে গেলে বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। তবে সত্যিই যদি তা করতে পারে, আমাদের সমর্থন থাকবে।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর দাবি, “তৃণমূলের নেতাদের হাত ধরে দুর্গাপুর জুড়ে বেআইনি দখলদারের রমরমা। কত উচ্ছেদ করবে? কয়েক দিন পরে সব থিতিয়ে যাবে।” পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বিরোধীদের কাজই সমালোচনা করা। মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্দেশ দিয়েছেন তেমন পদক্ষেপ করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement