ফের ‘হেনস্থা’ বিশ্ববিদ্যালয়ে

র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রকে নিয়ে তাঁর পাঁচ বন্ধু-সহ বর্তমান ছাত্রদের একাংশ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট অফিসার তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট কন্ট্রোলার প্রদীপকুমার রায়ের কাছে স্মারকলিপি দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকের কথা মতো বন্ধুরা র‌্যাগিংয়ের ‘শিকার’ ছাত্রকে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন হস্টেলে। অভিযোগ, সেখানে তাঁদের প্রায় চার ঘণ্টা হস্টেলেরই একটি ঘরে আটকে রেখে ওই আধিকারিকের উপস্থিতিতে গালিগালাজ করেন কয়েক জন প্রাক্তন ছাত্র ও তাঁদের সঙ্গীরা। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রবীন্দ্র হস্টেলের’ ঘটনা। ঘটনাচক্রে, র‌্যাগিং চালানোর অভিযোগ উঠেছিল যে চার জন প্রাক্তন ছাত্রের বিরুদ্ধে, এ দিনের ঘটনাতেও অভিযুক্ত তাঁরাই।

Advertisement

গত ২৫ অক্টোবর ওই হস্টেলের ‘আবাসিক’, স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের এক ছাত্র বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে ওই চার প্রাক্তনী রাস্তায় বার করে দেন। এই ঘটনায় ‘অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটি’কে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দেন উপাচার্য নিমাই সাহা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, র‌্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রকে নিয়ে তাঁর পাঁচ বন্ধু-সহ বর্তমান ছাত্রদের একাংশ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট অফিসার তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট কন্ট্রোলার প্রদীপকুমার রায়ের কাছে স্মারকলিপি দেন। হস্টেলে ‘র‌্যাগিং’ বন্ধ করা, প্রাক্তন ছাত্রদের হস্টেল থেকে বার করা, হেনস্থার শিকার ওই ছাত্রকে হস্টেলে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

Advertisement

এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পাঁচ ছাত্রের দাবি, তাঁরা প্রদীপবাবুর কথা মতো তাঁকে সঙ্গে নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তাঁদের বন্ধু তথা ‘র‌্যাগিংয়ের শিকার’ ছাত্রটিকে হস্টেলে পৌঁছে দিতে যান। ওই পাঁচ ছাত্রের অভিযোগ, হস্টেলে পৌঁছনো মাত্র ওই চার প্রাক্তনী এবং তাঁদের কয়েক জন সঙ্গী সকলকে হস্টেলের একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে ‘র‌্যাগিংয়ের শিকার’ ওই ছাত্র ও তাঁর পাঁচ বন্ধুকে গালিগালাজ ও হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যে প্রদীপবাবু ‘মেস কমিটির’ সঙ্গে কথা বলতে যান বলে ওই পাঁচ ছাত্রের দাবি। খানিক বাদে তিনি ফিরে আসেন। তাঁর উপস্থিতিতেই ওই প্রাক্তনীরা তাঁদের গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ সূর্যেন্দু বসু নামে এক ছাত্রের। তাঁর কথায়, ‘‘স্যর কোনও রকমে ওই প্রাক্তনীদের শান্ত করেন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমাদের ওই ঘরে আটকে রাখা হয়।’’ ওই পাঁচ ছাত্রের দাবি, গোটা বিষয়টি তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে ই-মেল করে জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি প্রদীপবাবু। শুক্রবার এই ঘটনা এবং র‌্যাগিংয়ের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দেয় এসএফআই। এই ঘটনা ও ২৫ অক্টোবরের ঘটনায় অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে কোনও কথা বলব না। যা বলার মেস কমিটি বলবে।’’ মেস কমিটির সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও রাত পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সভাপতি মণিকাঞ্চন মণ্ডল জানান, তিনি এখন বাইরে রয়েছেন। বর্ধমানে ফিরে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তাফাজল হোসেন বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement